শেয়ারবাজারের ভয়াবহ দরপতনের ঘটনায় বিক্ষোভ করেছেন বিনিয়োগকারীরা। বিনিয়োগকারীরা বিএসইসির চেয়ারম্যান খোন্দকার রাশেদ মাকসুদের পদত্যাগ দাবি করেছেন।
দরপতনের প্রতিবাদে দুপুর ১২টার দিকে একদল বিনিয়োগকারী মতিঝিলে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ভবনের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় তাঁরা শেয়ারবাজারের সাম্প্রতিক দরপতনের জন্য পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের ভুল নীতিকে দায়ী করে বিভিন্ন স্লোগান দেন। পাশাপাশি তাঁরা বিএসইসির বর্তমান চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবি করেন। বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের ব্যানারে এই বিক্ষোভ হয়।
এ সময় মানববন্ধন কর্মসূচিতে বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের একাংশের সভাপতি মিজান উর রশিদ চৌধুরীসহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। মানববন্ধনে অংশ নেওয়া বিনিয়োগকারীদের ‘শেয়ারবাজার ঠিক কর, নইলে বুকে গুলি কর’, ‘শেয়ারবাজার পড়লো কেন, ডিএসই জবাব দাও’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।
সংগঠনটির সভাপতি মিজান উর রশিদ চৌধুরী তার বক্তব্যে বলেন, তালিকাভুক্ত কোন কোম্পানির দর ইস্যু মূল্যের নিয়ে যাওয়া মাত্রই তাদের বাধ্যতামূলক বাইব্যাক আইনের আওতায় আনতে হবে। এর বিকল্প কোন পথ নেই। এই পন্থা অনুসরণ করলে শেয়ারের বিভাজন হবে না।
তিনি বলেন, পৃথিবীর কোন মার্কেটে শেয়ারের বিভাজন নেই। অথচ আমাদের পুঁজিবাজারে এ ক্যাটাগরি, এন ক্যাটাগরি, জেড ক্যাটাগরি, ওটিসি মার্কেট নামে শেয়ারের বিভাজন আছে। তালিকাভুক্ত কোম্পানিদের বাইব্যাক আইনের আওতায় আনলে এসব বিভাজন থাকবে না।
তিনি আরও বলেন, পুঁজিবাজারে কোন এসএমই মার্কেট থাকতে পারে না। শেয়ারবাজারে কোন কোম্পানি তালিকাভুক্ত হতে হলে তাদের ৫০ কোটি টাকা থাকতে হবে।
সংগঠনটির অর্থ সম্পাদক মো. সাজ্জাদুর রহমান বলেন, পুঁজিবাজারের ধারাবাহিক দর পতন অব্যাহত রয়েছে। এ পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। এখন বিনিয়োগকারীদের একটাই দাবি, বিএসইসির নতুন চেয়ারম্যানের পদত্যাগ। একইসঙ্গে আমরা সরকারের কাছে দুই স্টক এক্সচেঞ্জ বাদ দিয়ে একটি ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জ গঠনের দাবি জানাচ্ছি। আর সদস্যভুক্ত মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোকে পুঁজিবাজারের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অংশগ্রহণ থেকে বিরত রাখার দাবি জানাচ্ছি।
আন্দোলনে অংশ নেওয়া বিনিয়োগকারীদের আইপিও এবং প্লেসমেন্ট শেয়ারের অবৈধ বাণিজ্য বন্ধ, খন্দকার ইব্রাহীম খালেদের তদন্ত কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী দোষীদের অবিলম্বে আইনের আওতায় এনে শাস্তি দেওয়া, শেয়ারবাজার লুণ্ঠনকারীদের যথাযথ বিচার নিশ্চিত, বিনিয়োগকারীদের আদালত গড়ে তোলা, জিএমজি এয়ারলাইন্সের টাকা ফেরত দেওয়াসহ বেশ কিছু দাবি উপস্থাপন করতে দেখা যায়।
জানা যায়, দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনে শেয়ারবাজারে কিছুটা উন্নতি দেখা গেলেও আবার টানা দরপতন শুরু হয়েছে। গত এক মাসে ডিএসইর মূলধন কমেছে ২১ হাজার ৫৪৯ কোটি টাকা। এছাড়া গেল সেপ্টেম্বরে সূচকেও বেশ পতন দেখা গিয়েছে। এক মাসের ব্যবধানে ডিএসইর প্রধান সূচক প্রায় ২৪৩ পয়েন্ট কমেছে।
এ ইউ/
Discussion about this post