চলতি বছরের শুরু থেকেই দেশের পুঁজিবাজারে নানা অস্থিরতা, অনিশ্চয়তা চলছিল। বিনিয়োগকারীদের এক ধরনের আস্থা সংকট ছিল পুঁজিবাজারে। দীর্ঘদিন বাজারে মৌলভিত্তি সম্পন্ন কোম্পানির শেয়ারে ফ্লোর প্রাইস আরোপ করা ছিল। এর ফলে বিদায়ী বছরে জেড ক্যাটাগরির শেয়ারে দর বাড়লেও আশানূরুপ দর বাড়েনি ডিএসই-৩০ সূচকে অন্তর্ভুক্ত কোম্পানিগুলোর।
২০২৪ সালে সবচেয়ে বেশি দর কমেছে ডিএসই-৩০ সূচকে অন্তর্ভুক্ত ৫ কোম্পানির। কোম্পানিগুলো হচ্ছে- রেনাটা, ওরিয়ন ফার্মা, বেক্সিমকো ফার্মা, সী পার্ল বীচ রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা ও জিপিএইচ ইস্পাত লিমিটেডের।
রেনাটা
গত এক বছরে রেনাটার দর প্রায় অর্ধেক কমে গেছে। চলতি বছরের ১৭ ডিসেম্বর শেয়ারটি সর্বশেষ ৬৪৩ টাকা ৬০ পয়সা লেনদেন হয়েছে। যা ২০২৩ সালের ১৯ ডিসেম্বর ছিল ১ হাজার ২১৭ টাকা ৯০ পয়সা। অর্থাৎ গত এক বছরে শেয়ারটির দর ৫৫৬ টাকা ৪০ পয়সা বা ৪৬ শতাংশ কমেছে।
ওষুধ খাতের রেনাটা ‘এ’ ক্যাটাগরির মৌলভিত্তিসম্পন্ন কোম্পানি হিসাবে পরিচিত। কোম্পানিটি দীর্ঘদিন ধরে বিনিয়োগকারীদের বড় অংকের লভ্যাংশ দিয়ে আসছে। গত ৫ বছরে কোম্পানিটির লভ্যাংশ চিত্র তুলে ধরা হলো- ২০২০ সালে ১৩০% নগদ,১০% বোনাস, ২০২১ সালে ১৪৫% নগদ ও ১০% বোনাস, ২০২২ সালে ১৪০% নগদ, ৭% বোনাস, ২০২৩ সালে ৬২.৫০% নগদ ও ২০২৪ সালে ৯২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে।
ওরিয়ন ফার্মা
একইভাবে ওরিয়ন ফার্মার দরও প্রায় অর্ধেক কমে গেছে। চলতি বছরের ১৭ ডিসেম্বর শেয়ারটি সর্বশেষ ৩৮ টাকা ৩০ পয়সা লেনদেন হয়েছে। যা ২০২৩ সালের ১৯ ডিসেম্বর ছিল ৭৯ টাকা ৬০ পয়সা। অর্থাৎ গত এক বছরে শেয়ারটির দর ৪১ টাকা ৪০ পয়সা বা ৫২ শতাংশ কমেছে।
ওরিয়ন ফার্মা দীর্ঘদিন ধরে বিনিয়োগকারীদের ভালো লভ্যাংশ দিয়ে আসছে।
গত ৫ বছরে কোম্পানিটির লভ্যাংশ চিত্র তুলে ধরা হলো- ২০১৯ সালে ১৫ শতাংশ, ২০২০ সালে ১০%, ২০২১ সালে ১২%, ২০২২ সালে ১০%, ২০২৩ সালে ১০ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে।
বেক্সিমকো ফার্মা
গত ১ বছরে বেক্সিমকো ফার্মার শেয়ার দর কমেছে ৬২ টাকা বা ৪২ শতাংশ। চলতি বছরের ১৫ ডিসেম্বর শেয়ারটি সর্বশেষ ৮৪ টাকা ২০ পয়সা লেনদেন হয়েছে। যা ২০২৩ সালের ১৯ ডিসেম্বর ছিল ১৪৬ টাকা ২০ পয়সা।
ওষুধ খাতের কোম্পানিটির গত ৫ বছরে লভ্যাংশ চিত্র তুলে ধরা হলো- ২০১৯ সালে ১৫%, ২০২০ সালে ১৫% নগদ ও ১০% বোনাস, ২০২১, ২২ ও ২৩ সালে ৩৫% নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে।
সী পার্ল বীচ
গত ১ বছরে সবচেয়ে বেশি দর কমেছে সী পার্ল রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা লিমিটেডের। কোম্পানিটির শেয়ার দর কমেছে ৮৮ টাকা ৫০ পয়সা বা ৭১ শতাংশ। চলতি বছরের ১৮ ডিসেম্বর শেয়ারটি সর্বশেষ ৩৪ টাকা ৬০ পয়সা লেনদেন হয়েছে। যা ২০২৩ সালের ২১ ডিসেম্বর ছিল ১২৪ টাকা।
২০১৯ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সী পার্ল বীচের গত ৫ বছরের লভ্যাংশের চিত্র তুলে ধরা হলো- ২০১৯ সালে ৫% বোনাস, ২০২০ ও ২১ সালে সালে ১ শতাংশ, ২০২২ সালে ১৫ শতাংশ ও ২০২৩ সালে ১৭ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। আর সর্বশেষ ২০২৪ সালে কোম্পানিটি ৭ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। আলোচ্য বছরে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি ইপিএস হয়েছে ২ টাকা ৩২ পয়সা।
জিপিএইচ ইস্পাত
প্রকৌশল খাতের কোম্পানি জিপিএইচ ইস্পাতের শেয়ার দর গত ১ বছরে প্রায় অর্ধেক কমেছে।
কোম্পানিটির শেয়ার দর কমেছে ২০ টাকা ৩০ পয়সা বা ৪৮ শতাংশ। চলতি বছরের ১৮ ডিসেম্বর শেয়ারটি সর্বশেষ ২২ টাকা ৪০ পয়সা লেনদেন হয়েছে। যা ২০২৩ সালের ২১ ডিসেম্বর ছিল ৪২ টাকা ৭০ পয়সা।
এ ক্যাটাগরির কোম্পানিটি দীর্ঘদিন ধরে বিনিয়োগকারীদের ভালো লভ্যাংশ দিচ্ছে। সর্বশেষ ২০২৪ সালে কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। আলোচ্য বছরে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি ইপিএস হয়েছে ১ টাকা ৭৭ পয়সা।
এস এম/
Discussion about this post