সাভারের আশুলিয়ায় বিভিন্ন তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা সরকার ঘোষিত বাৎসরিক ইনক্রিমেন্ট ৪ শতাংশ বৃদ্ধির ঘোষণা প্রত্যাখান করে বাৎসরিক ১৫ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট বৃদ্ধির দাবিতে কর্মবিরতি পালন করেছে। এর আগে সরকার ঘোষিত বাৎসরিক ইনক্রিমেন্ট ছিল ৫ শতাংশ। সরকার আরও ৪ শতাংশ বৃদ্ধি করে এখন ৯ শতাংশ করেছে। তবে তাদের দাবি ১৫ শতাংশ।
অব্যাহত কর্মবিরতীর কারণে বুধবার শিল্পাঞ্চলের নরসিংহপুর ও আশপাশের এসব কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দিলে অন্তত ৩৫টি কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আশুলিয়ার নরসিংহপুর এলাকার হামীম গ্রুপ, শারমীন গ্রুপ, মেডলার, নেক্সট কালেকশন, আল মুসলীম, সেতারা গ্রুপ, নিউ এইজ, ডেকো, বান্দু ডিজাইন, ভিনটেজ, নীট এশিয়া, মানতা, ডেবনিয়ার, অরবিটেক্স, এএম ডিজাইন, ইসলাম গার্মেন্টস, দ্যা রোজ, অ্যাপারেলস গ্যালরি, এথিকালসহ বেশ কিছু কারখানার শ্রমিকরা সকালে কারখানায় এলেও ইনক্রিমেন্ট বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন দাবিতে কর্মবিরতি পালন করে। শ্রমিকদের আন্দোলনের কারণে নাসা ও ট্রাউজার লাইন শ্রম আইনের ১৩ (১) ধারায় তাদের কারখানা বন্ধ ঘোষণা করে। শ্রমিকরা কোনো বিশৃঙ্খলা বা ঝামেলা না করলেও বর্ধিত বেতনে সন্তুষ্ট না হওয়ায় তারা কর্মবিরতি পালন করে এবং কেউ কারখানা থেকে বেরিয়ে যায়।
বিক্ষুদ্ধ শ্রমিকরা জানান, সরকার ঘোষিত বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট ৪ শতাংশ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে তারা ১৫ শতাংশ বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট বৃদ্ধিসহ ৭ দফা দাবি জানিয়েছেন। অন্যথায় শ্রমিকেরা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাবে বলে জানান তারা। বিক্ষুদ্ধ শ্রমিকদের মাঝ থেকে স্টারলিং নামক একটি পোশাক কারখানায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হলে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।
শিল্প পুলিশ জানায়, শ্রমিকরা কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা বা ঝামেলা করছেন না। তবে বর্ধিত বেতনে শ্রমিকরা সন্তুষ্ট নয়। তাদের দাবি, ১৫ শতাংশ ইনক্রিমেন্টের। তাই শ্রমিকরা কাজ বন্ধ রেখেছেন। অনেক শ্রমিক আবার কারখানা থেকে বের হয়ে গেছেন। সকালে ১২টি পোশাক কারখানা সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে। পরে আরও সাতটি কারখানা সাধারণ ছুটি ঘোষণা করতে বাধ্য হন। এছাড়া আরও ১৫/১৬টি কারখানায় শ্রমিকরা প্রবেশ করে কাজ বন্ধ করে দেন। পরে এসব কারখানার কর্তৃপক্ষ তাদের বুঝিয়ে কাজে ফিরতে বললে তারা কারখানা থেকে চলে যায়। সব মিলিয়ে বুধবার অন্তত ৩৫টি কারখানায় আজ উৎপাদন বন্ধ ছিল।
শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার মো. মোমিনুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, বর্ধিত বেতনে সন্তুষ্ট নন শ্রমিকরা, তাই তারা কাজ বন্ধ করে বসে আছে। এখন পর্যন্ত ৩৫ টি কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। তবে কোনো প্রকার অরাজকতা কিংবা বিশৃঙ্খলার ঘটনা ঘটেনি। তবে বিশৃঙ্খলা এড়াতে শিল্পাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ ও সেনাসদস্য, বিজিবি ও র্যাব মোতায়েন রয়েছে বলেও জানান তিনি।
এ ইউ/
Discussion about this post