দেশের সক্ষমতার নতুন স্মারক হয়ে দাঁড়ানো মেগাস্ট্রাকচার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র এখন প্রস্তুত হচ্ছে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য। চলতি বছরের শেষ নাগাদ চালু হতে যাচ্ছে বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট। আর ২০২৫ সালের মধ্যেই চালু হবে বাকি ইউনিট অর্থাৎ, পুরো কেন্দ্র। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই বাংলাদেশকে প্রকল্পটি বুঝিয়ে দিতে পূর্ণ নিশ্চয়তা দিচ্ছে নির্মাতা দেশ রাশিয়াও। আর বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্বল্পতম সময়ে জটিল এ প্রকল্প বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে নতুন রেকর্ড গড়তে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
গত বছর সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ শুরু হয় পারমাণবিক জ্বালানি ইউরেনিয়াম নিয়ে আসার প্রক্রিয়া। রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত পরমাণু সংস্থা রোসাটমের তত্ত্বাবধানে ৭টি ধাপে ১৬৮টি ইউরেনিয়ানের অ্যাসেম্বলি পৌঁছে গেছে রূপপুরের প্রকল্প এলাকায়। এখন চলছে পুঙ্খানুপুঙ্খ পরীক্ষা-নিরীক্ষা, আর জ্বালানি লোডিংয়ের প্রস্তুতি।
এ প্রসঙ্গে রোসাটমের ডিজি অ্যালেক্সি লিখাচেভ বলেন, বিড়ম্বনার অনেক ধাপ পেরিয়ে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় মেগা প্রকল্পটি এখন সফলতার দ্বারপ্রান্তে। প্রকল্প এলাকায় পারমাণবিক জ্বালানি পৌঁছানোর অর্থই হলো, বড় আকারে স্টার্ট-আপ কর্মসূচির জন্য এখন চূড়ান্ত প্রস্তুতির সময় হয়ে গেছে। কমিশনিংয়ের আগে সুক্ষ্ম যন্ত্রপাতিগুলোর উপর অন্তত দেড় হাজার পরীক্ষা চালানো হবে। গেলো কয়েক বছর অনেক চাপের মধ্য দিয়ে পার হলেও, সব চ্যালেঞ্জই এখন পর্যন্ত সফলভাবে উতরানো গেছে। সামনেও চ্যালেঞ্জ থাকবে। কিন্তু কোনও চ্যালেঞ্জের মুখেই প্রকল্প এলাকা ছেড়ে যাবে না রাশিয়ান একজন কর্মীও। কোনো অবস্থাতেই এ বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে পেছনে ফিরে আসার আর সুযোগ নেই।
এদিকে, টানা চতুর্থবার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়া স্থপতি ইয়াফেস ওসমান বলেন, কাজ চলছে সূচি মাফিক; ২০২৫ সালেই পরমাণু বিদ্যুৎ পাবে দেশ।
মন্ত্রী বলেন, ‘এই ধরনের প্রযুক্তি নিয়ে বিদ্যুৎ তৈরি করা বেশ কঠিন কাজ। এটা এখন আর গাল-গল্প নয়; বরং সত্যি। এখন আমরা পরমাণু বিদ্যুতের যুগে প্রবেশ করেছি। ফুয়েল চলে আসা মানেই এটা আমরা অর্জন করেছি। ২০২৪ সালেই প্রথম ইউনিট চালু হবে। আর ২০২৫ সালের মধ্যেই চালু হবে পুরো কেন্দ্র।’
রাশিয়ার আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় নির্মাণাধীন এ প্রকল্পটিতে ভিভিইআর প্রযুক্তির তৃতীয় প্রজন্মের রিঅ্যাক্টর বা পরমাণু চুল্লি ব্যবহৃত হচ্ছে, যার প্রত্যেকটির উৎপাদন সক্ষমতা ১২শ মেগাওয়াট করে।
পরমাণু বিশেষজ্ঞদের মতে, এতো অল্প সময়ের মধ্যে পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে নতুন রেকর্ড করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এর মাধ্যমে সক্ষমতার নতুন ধাপে পা রাখছে দেশ।
এফএস/
Discussion about this post