সরকারি ত্রাণের চাল কালোবাজী চক্রের ১১ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে থানা পুলিশ। এসময় ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ১৯ হাজার কেজি চাল উদ্ধার করা হয়। রবিবার (৩১মার্চ) বাড্ডার মেরুল কাঁচাবাজার সংলগ্ন ইখতিয়ারের সেমি পাকা ঘরে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
অভিযানে আটককৃতরা হলেন – জাহিদ হাসান (২১), ফারুক (৩৪), শাওন (১৯), নূর ইসলাম (২০), কবির (৩৫), রিফাত (১৯), এনামুল (২০), লিটন (২৮), আরিফ (২৯), লিটন (২৪), এবং রাসেল (২৪)। তবে, গোডাউনের ম্যানেজার মোঃ আমিনুল ইসলাম আমিন (৩৭), সহ আরও ৭/৮ জন পুলিশে উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায়।
বাড্ডা জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) রাজন কুমার সাহা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ জানায়, গোপন খবরের ভিত্তিতে বাড্ডা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) নাদিম মাহমুদ সেখানে গিয়ে জানতে পারেন, ওই গোডাউনে খাদ্য অধিদপ্তরের লোগোযুক্ত সরকারি চালের বস্তা বদলে ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের লোগোযুক্ত বস্তায় ভর্তি করে কালোবাজারি করে বিক্রির প্রক্রিয়া চলছে। খাদ্য অধিদপ্তরের বস্তা খুলে চালগুলো নুরজাহান ব্রান্ডের বস্তায় ঢুকিয়ে বাজারজাতের জন্য প্রক্রিয়াকরণ করা হচ্ছিল।
অভিযানে খাদ্য অধিদপ্তরের লোগোযুক্ত ৩০ কেজি ওজনের ৯৬ বস্তা চাল, বস্তা বদলানো নুরজাহান ব্রান্ডের ৫০ কেজি ওজনের ৩০৬ বস্তা চাল ও ঘরের মেঝেতে খোলা অবস্থায় আনুমানিক ৮০০ কেজি চাল পাওয়া যায়।
এছাড়া খাদ্য অধিদপ্তরের লোগোযুক্ত পাটের খালি বস্তা ৪৮০টি ও নুরজাহান ব্রান্ডের প্লাস্টিকের খালি বস্তা ৪৫০টি, ওজন মাপার যন্ত্র একটি, বস্তা সেলাইয়ের যন্ত্র একটি, বস্তা সেলাইয়ের ২০ রোল সুতা ও চাল আনা-নেওয়ার কাজে ব্যবহৃত একটি ট্রাকও জব্দ করা হয়। আটক করা হয় ট্রাকের চালক ও চালকের সহকারীকে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা জানায়, কতিপয় অসাধু সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ঠিকাদারদের মাধ্যমে সরকারি খাদ্য ভান্ডার থেকে চোরাইভাবে সংগ্রহ করে ট্রাকে করে গোডাউনে নিয়ে আসা হত। এরপর খাদ্য অধিদপ্তর এর লোগো সম্বলিত সরকারী বস্তা পরিবর্তন করে ভিন্ন নামে ৫০ কেজি ওজনের প্লাষ্টিকের বস্তায় ঢুকিয়ে আধুনিক মেশিন দিয়ে সেলাই করে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে পাঠানো হত।
সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) রাজন কুমার গণমাধ্যমকে বলেন, “পবিত্র রমজান মাস ও আসন্ন ঈদ-উল-ফিতরকে সামনে রেখে এ ধরনের কালোবাজারী ঠেকাতে পুলিশের অভিযান অব্যহত আছে । বাজারে কোন অসাধু ব্যবসায়ী যেন কোন পণ্য জালিয়াতি বা কারসাজি করে বাজারজাত করতে না পারে সে জন্য গুপ্তচর নিয়োগের মাধ্যমে সনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার প্রক্রিয়া চলমান আছে।” এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে বলেও জানান তিনি।
টিবি
Discussion about this post