বরগুনার আমতলীতে সেতু ভেঙে মাইক্রোবাস খালে পড়ে নিহত ৯ জনের মধ্যে ৭ জনই মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার ভদ্রাসন ইউপির সাহাপাড়া এলাকার সাবেক সেনাসদস্য মাহাবুবর রহমান সবুজের পরিবারের সদস্য।
শনিবার (২২ জুন) দুপুরে উপজেলার হলদিয়া বাজার সংলগ্ন ব্রিজটি ভেঙে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ দুর্ঘটনায় শিশুসহ ৯ নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আমতলী থানার ওসি কাজী মো. সাখাওয়াত হোসেন তপু।
জানা গেছে, খালাতো বোনের বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় পরিবারের ৭ সদস্য হারান সাবেক সেনা সদস্য মাহাবুবুর রহমান সবুজ। তিনি ও এলাকার ফজলুর রহমান খানের ছেলে।
এদিকে, দুর্ঘটনার খবর গ্রামের বাড়িতে পৌঁছালে শোকের মাতম উঠে বাড়িতে। এলাকাবাসী এসে ভিড় জমান মাহাবুবুর রহমান সবুজের বাড়িতে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সকালে শিবচর থেকে মাহাবুব এবং তার পরিবারের সদস্যরা খালাতো বোনের বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বরগুনার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। শনিবার তাদের বহনকারী মাইক্রোবাসটি আমতলীর হলদিয়া বাজার সংলগ্ন লোহার সেতু ভেঙে খালে পড়ে যায়। পরে দুই শিশুসহ ৯টি লাশ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস। চারজনকে জীবিত উদ্ধার করা গেলেও এখনো নিখোঁজ রয়েছে তিনজন।
একই পরিবারের নিহতরা হলেন- মাহাবুবের ভাই সোহেলের স্ত্রী রাইতি (৩০), শাশুড়ি রুমি বেগম (৪০), মাহাবুবের মা ফরিদা বেগম (৪০), মামি মুন্নি বেগম (৪০), তার সন্তান তাহিয়া (৭), তাসদিয়া (১১), আরেক মামি ফাতেমা বেগম (৪০)। এছাড়া আমতলীর হলদিয়া গ্রামের জহিরুল ইসলামের মেয়ে হৃদি (৫) ও তার মা জাকিয়া বেগম (৩০)।
নিহতদের আত্মীয় শুক্কুর আলী নামের এক যুবক বলেন, ‘মাইক্রোবাসযোগে শনিবার বিয়ের অনুষ্ঠানে বরগুনার আমতলীতে যাই। দুপুরে ব্রিজ ভেঙে খালে পড়ে যায় মাইক্রোবাসটি। এতে মাহাবুবের মা, ভাইয়ের স্ত্রী ও মামার পরিবারের মোট ৭ সদস্যদের মৃত্যু হয়েছে।’
দুলাল মাতুব্বর নামের আরেক ব্যক্তি বলেন, পুরো গ্রামে শোকে স্তব্ধ। দুই পরিবারের মোট ৯ জন সদস্য মারা গেছেন। আমরা খবর পেয়ে মাহাবুবের বাড়িতে এসেছি। ওদের পরিবারের কেউ বাড়িতে নেই। সবাই ওই অনুষ্ঠানে গিয়েছিল। এখন বাড়িতে কেউ নেই।’
ভদ্রাসন ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম বেপারী বলেন, ‘আমরা খবর পেয়েই বাড়িতে এসেছি। আসলে এত বড় দুর্ঘটনায় আমরা বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছি। এখন তাদের মরদেহ বাড়িতে আনার প্রস্তুতি চলছে বলে খবর পেয়েছি।’
শিবচরের ইউএনও আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আমি বিষয়টি জেনেছি। খুবই মর্মান্তিক ঘটনা।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত নিহতদের মরদেহ বাড়িতে আনার প্রস্তুতি চলছে।
টিবি
Discussion about this post