অভিনেতা আদনান ফারুক হিল্লোল ও শ্রাবস্তী দত্ত তিন্নির প্রেম ও বিয়ে একটা সময় ‘টক অব দ্য মিডিয়া’ ছিল। ২০০৬ সালে প্রেম। আর ২০০৯ সাল থেকে আলাদা থাকতে শুরু করেন তিন্নি-হিল্লোল। এরমধ্যেই আসে তাঁদের সন্তান ওয়ারিশা। দুজনের মধ্যে কলহ তীব্র আকার ধারণ করায় বিচ্ছেদের পথ বেছে নেন তাঁরা।
এরপর ছোট পর্দার আরেক অভিনেত্রী নওশীনের সঙ্গে সংসার বাঁধেন হিল্লোল। বর্তমানে দুজনেই নিউইয়র্কের বাসিন্দা। তাঁদের ঘরে এসেছে সন্তান। অভিনেতা থেকে হিল্লোল এখন পুরাদস্তুর ফুড ভ্লগার। তবে সাবেক স্ত্রী তিন্নিকে নিয়ে প্রায়ই প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় হিল্লোলকে।
সম্প্রতি বেসরকারি একটি টিভি চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সাবেক স্ত্রী তিন্নির সঙ্গে বিচ্ছেদের কারণ, বর্তমান সম্পর্কের সমীকরণ এবং প্রায় ৩০ বছরের ক্যারিয়ার নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন অভিনেতা।
অভিনয়ের ছেদ প্রসঙ্গে হিল্লোল বলেন, ‘‘২০১৭-১৮ থেকে নাটকে কাজ করছি না। আমি আসলে উপভোগ করছিলাম না। যে ধরনের কাজ হতো, সেগুলো এনজয় করতাম না। ২০০৩ সালে আমার একটা নাটক ছিল ‘স্পর্শের বাইরে’। ওই নাটকের মাধ্যমে জনপ্রিয়তা পাই। মানুষ রাস্তায় দূর থেকে ডাকত। তখন আসলে যে কোয়ালিটির কাজ হত, পরবর্তী সময় সেটা আর হচ্ছিল না। ২০১০-এর দিকে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে থাকল। ২০১৭-১৮’র দিকে প্রচুর কাজের চাপ চলে আসত। শরীরেও কুলাত না। নাটকগুলোর কোনো সাড়া পেতাম না।’’
নতুন প্রজন্মের কাছে ভ্লগার হিসেবে পরিচিত হিল্লোল। বিষয়টি নিয়ে তাঁর ভাবনা, ‘এটাকে শুধু ভ্লগিং হিসেবে দেখলে হবে না। কারণ, আমার কাছে টেকনোলজিটা ২০১১-১২ থেকে খুব ইন্টারেস্টিং লাগতে শুরু করে। তখন থেকেই অনুভব করলাম যে এটার এক ধরনের ভবিষ্যৎ সামনে আছে। এটা নিয়ে কাজও শুরু করি। মাথার মধ্যে ছিল আমার একটি ডিজিটাল পরিচয় তৈরি করা দরকার। যে পরিচয়টা মানুষের কাছে পরবর্তী ৩০ বছর বাঁচিয়ে রাখবে। খাবার ও পণ্যের বিষয়টা আমার আগ্রহ ছিল। সেটা থেকেই শুরু করা। পারিবারিকভাবেই আমরা ভোজনরসিক মানুষ, সে কারণে খাদ্য বিষয়টাই আমার ভালো লাগে। তবে ফুড ভ্লগিংয়ে উত্থান-পতনও আছে। এটাকে ক্যারিয়ার হিসেবে রাখা ঠিক হবে না। কাজের বাইরে বাড়তি কাজ হিসেবে রাখা উচিত হবে।’
সাবেক স্ত্রী তিন্নিকে নিয়ে আলোচনায় ছিলেন একটা সময়। এখন মাঝেমধ্যে অন্তর্জালে যখন বিষয়টি আসে, তখন কি মনে কোনো রেখাপাত করে? উত্তরে হিল্লোল বলেন, ‘রেখাপাত করে না। কারণ আমি জানি, ডিজিটাল কনটেন্টটা আসলে কী? এই প্রশ্নও ডিজিটাল রিচ। সে কারণে আমি যেহেতু ডিজিটাল কনটেন্ট নিয়ে কাজ করি, আমি জানি যেসব কনটেন্ট ক্রিয়েটররা রিচ চান। এটা স্বাভাবিক বিষয়। ৯০ শতাংশ সম্পর্ক নিয়ে দ্বন্দ্ব হয়। তিন্নির সঙ্গে এখন খুব ভালো সম্পর্ক। আমার মেয়ের ১৬ বছর চলছে। ও ক্লাস নাইনে পড়ে। আমাদের মেয়ের কারণেও যোগাযোগ করতে হয়। বর্তমান স্ত্রীর সঙ্গেও তিন্নির নিয়মিত যোগাযোগ হয়। ছোট মেয়েকে তো সময় দেওয়া হয়। বড় মেয়েকে বছরে একবার সময় দেওয়া হয়, যখন কানাডাতে যাই।’
তিন্নি-হিল্লোল সম্পর্ক থেকে কোনো শিক্ষা পেয়েছেন কি-না, এমন প্রশ্নে হিল্লোলের ভাষ্য, ‘ওখান থেকে কোনো শিক্ষা পাইনি। ওটা ভুল ছিল। আমার কিংবা তাঁর দিক থেকে হতে পারে। ওরও হয়তো ভুল ছিল। তবে বর্তমান সম্পর্কে সেই ভুলটা হয়নি। আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে আজকে আমাদের সম্পর্কের ১৪ বছর পর এসে বলতে পারি, সেই ভুলটা হয়তো এই সম্পর্কের ক্ষেত্রে হয়নি।’
এ এস/
Discussion about this post