প্রতি বছর হিজরি বর্ষের শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতটি ‘শবে বরাত’ হিসেবে পালিত হয়। এবারও যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদায় গতকাল রবিবার দিবাগত রাতে সারাদেশে পবিত্র ‘শবে বরাত’ পালিত হয়েছে। এদিন রাতে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা মহান আল্লাহর রহমত ও নৈকট্য লাভের আশায় নফল নামাজ আদায়, কোরআন তিলাওয়াত, জিকির, ওয়াজ ও মিলাদ মাহফিলসহ নানা ইবাদত-বন্দেগির মধ্য দিয়ে রাতটি অতিবাহিত করেছেন।
সৌভাগ্যের এ রজনীতে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে নারী-পুরুষ-শিশু-বৃদ্ধসহ সর্বস্তরের মুসলমানরা মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য ইবাদত-বন্দেগিতে মশগুল ছিলেন। কেউ কেউ ইবাদতে মশগুল থেকেছেন ফজরের নামাজ পর্যন্ত। এ উপলক্ষে অনেকে নফল রোজাও রেখেছেন।
মহিমান্বিত এ রজনীতে মুসলিম উম্মাহর সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের মুসলমানরাও বিশেষ মোনাজাত ও দোয়ায় শামিল ছিলেন।এদিন রাতে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে মিলাদ ও বিশেষ মোনাজাত হয়েছে।
এ ছাড়া গতকাল রাতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানমালার মধ্যে ছিল–ওয়াজ মাহফিল, কোরআন তিলাওয়াত, মিলাদ মাহফিল, হামদ, নাত, নফল নামাজ, তাহাজ্জুদের নামাজ ও আখেরি মোনাজাত।
পবিত্র এ রাতে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের এবাদত বন্দেগির জন্য জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমসহ দেশের সব মসজিদ সারা রাত খোলা রাখা হয়েছে। প্রতিবছরের ন্যায় এবারও শবে বরাতের নামাজ পড়তে বায়তুল মোকাররমে উপস্থিত হয়েছেন হাজারো মুসল্লি। কারো হাতে জায়নামাজ, কারো হাতে তসবিহ। প্রত্যেকেই জাতীয় মসজিদে ইবাদত বন্দেগি করার জন্য এসেছেন।

রোববার বাদ এশা রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মসজিদ ও আশেপাশের এলাকায় এ চিত্র দেখা গেছে।
শুধু বায়তুল মোকাররমই নয়, এশার নামাজকে কেন্দ্র করে রাজধানীর সব মসজিদেই দেখা গেছে উপচেপড়া ভিড়। নানা বয়সী ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা আসছেন জামাতে নামাজ আদায় করতে। আগত মুসল্লিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অতীতের পাপ ও অন্যায়ের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা এবং ভবিষ্যৎ জীবনের কল্যাণ কামনা করে মোনাজাত করতেই তারা বায়তুল মোকাররম মসজিদে এসেছেন।
এদিকে পবিত্র শবে বরাত উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
এ ছাড়া পবিত্র শবে বরাত উপলক্ষে আজ সোমবার সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, শবে বরাত সম্পর্কে হাদিসে বলা হয়েছে- নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহতায়ালা অর্ধশাবানের রাতে (শবে বরাত) মাখলুকাতের দিকে রহমতের দৃষ্টি দেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ পোষণকারী ছাড়া আর সবাইকে ক্ষমা করে দেন।’ যে রাতে বান্দাকে তার প্রতিপালক গোনাহ থেকে মুক্তি দিয়ে ক্ষমা করে দেন।
এ জেড কে/
Discussion about this post