অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন স্থানে অক্টোবর নভেম্বর মাসে তাকালে প্রায় সব জায়গায় কম বেশী দেখা যায় বেগুনী নীল রংয়ের পাতা বিহীন একটি ফুল গাছ যার নাম হচ্ছে জ্যাকারান্ডা। সাধারণত রাস্তার ধারে সারিবদ্ধ ভাবে লাগানো হয় আলংকারিক বা সৌন্দর্য বৃক্ষ হিসেবে।
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দেওয়া বাংলা নাম হচ্ছে “নীলকন্ঠ”। জ্যাকারান্ডা ফুলের রঙ বেগুনী বা নীল রঙের হয়ে থাকে, বসন্তে কোনো পাতা থাকে না; ফলে গোটা বৃক্ষটিকে মনে হয় বেগুনী বা নীল বৃক্ষের মত,এই ফুল গাছ বসন্তে বেশ স্বাপ্নিক একটা আমেজ নিয়ে আসে।
এই ফুলের নিজস্ব সৌন্দর্যের জন্য বিভিন্ন কৃষ্টিতে,সাহিত্যে, গানে বাজনায় এই ফুলের কথা আছে। এমনকি কুসংস্কারেও বিভিন্ন জাতিতে রয়েছে জ্যাকারান্ডা ফুলের কথা।
স্যার জেমস্ মার্টিন এর উদ্দোগে জ্যাকারান্ডা ফুলগাছের বীজ ১৮৫০ থেকে ১৮৬০ সালের দিকে ব্রাজিলের রিও ডি জেনেরিও থেকে প্রথম অস্টেলিয়াতে এসেছে বলে ধারনা করা হয়। ১৫০ বছরের কিছু বেশি সময় পুর্বে এই গাছ অস্ট্রেলিয়াতে প্রবেশ করেছে অথচ বর্তমানে অস্ট্রেলিয়াবাসী জ্যাকারান্ডা বৃক্ষ ছাড়া তাদের বসন্তের পরিবেশ চিন্তাই করতে পারে না।
একটু ঝড়ো বাতাস বা বৃস্টি হলে এই ফুল ঝরে পড়ে সবুজ ঘাস ও রাস্তার উপর যা দুর থেকে দেখে মনে হয় যেন কেউ বেগুনী রংয়ের কার্পেট বিছিয়ে রেখেছে।তবে বৃষ্টির সময় খুব সাবধানে গাড়ী চালাতে হয় বা পথ চলতে হয় কারন ফুল আর পানি মিলে রাস্তা প্রচুর পরিমানে পিচ্ছিল হয়ে থাকে।
জ্যাকারান্ডা মূলত ‘স্বপ্ন গাছ’ নামে পরিচিত । জ্যাকারান্ডা ফুলের নাম এসেছে লাতিন ভাষা থেকে। ৪৯টি প্রজাতি নিয়ে গঠিত বিগ্নোনিয়াসি পরিবারের একটি প্রজাতির নাম জ্যাকারান্ডা।এটাকে এশিয়ার বিভিন্ন দেশে এমনকি অস্ট্রেলিয়াতেও অনুপ্রবেশ করানো হয়েছে।
সাধারণত বেগুনী ও নীল এই দুই ধরনের ফুল সর্বত্র দেখা যায়।নীলকন্ঠ বা নীল জ্যাকারান্ডা বিগ্নোনিয়াসি পরিবারের একটি উদ্ভিদ। এরা মাঝারি আকারের পত্রমোচি গাছ।
জ্যাকারান্ডার পাতা দেখতে বাংলাদেশী কৃস্নচূড়া ফুলের পাতার মত এবং ফুলের রং জারুল ফুলের মত বেগুনী রঙের। সিডনি শহরে কোগরা এলাকার মধ্যে ফ্রইস রিজার্ভ নামে একটা পার্কে অক্টোবর – নভেম্বর মাসে পুরো পার্কে সারি সারি জ্যাকারান্ডা
ফুলে ফুলে বেগুনী হয়ে থাকে এ উপলক্ষে প্রতি বছর অক্টোবরের শেষ সপ্তাহ ও নভেম্বরের প্রথম দ্বিতীয় সপ্তাহে “ফাগুন হাওয়া” ইনক অস্ট্রেলিয়া গত ২০১৮ থেকে জ্যাকারান্ডা মিলন মেলা করে মেয়েদের নিয়ে। এবছরে ৮৫ জন সুসজ্জিত নারীদের কে নিয়ে ১২ ই নভেম্বর রবিবারে আবারও অনুষ্ঠিত হয় “জ্যাকারান্ডা বিলাস ” ২০২৩ ফুলের সাথে মিলিয়ে সবাই মিলে চমৎকার বেগুনী পোশাকে নিজেদের কে সাজিয়েছিল প্রত্যেক নারী । চারিদিকে যেন এক বেগুনী রং এর আনন্দ উৎসব।সবাই মন খুলে আড্ডায় মেতে ওঠেন। বিভিন্ন বেগুনী সরন্জাম দিয়ে জায়গাটা সুন্দর করে সাজান হয়। এবং অনেক মুখরোচক খাবার পরিবেশন করা হয়।অনুষ্ঠানের পরিচালক তিশা তানিয়া বলেন – এত বেশী সাড়া আমরা এই অনুষ্ঠানের জন্য পেয়ে থাকি যে পাবলিকলি ঘোষনার আগেই টিকেট বুক হয়ে যায়।
অনুষ্ঠানে আগত অতিথীদেরকে শুভেচ্ছা বানী দিয়ে এবং উপস্তিত হওয়ার জন্য ধন্যবাদ বক্তৃতা দেন ফাগুন হাওয়ার আরেকজন কর্নধর কাউন্সিলর সাজেদা আক্তার সানজিদা।
বিশেষ সহযোগিতায় ছিলেন – নাজমুল হক, কিশোয়ার আখতার কাকলি , পলি ফরহাদ এবং আব্দুল্লাহ আল মামুন , শামিমা ইয়াসমিন, রোমানা,
সবশেষে জাকারান্ডার সাথে মিল রেখে অসম্ভব সুন্দর একটা কেক কাটার মধ্য দিয়ে এবং আকর্ষনীয় পুরস্কারের রেফ্যাল ড্র করে
শেষ হল “জাকারান্ডা বিলাস-২০২৩ “
Discussion about this post