চলতি বছর পবিত্র হজ পালন করতে ঘোড়ায় চড়ে সৌদি আরবে পৌঁছেছেন ইউরোপের চার সাহসী মুসলিম। তাদের মধ্যে একজন মরক্কো এবং তিনজন স্পেনের নাগরিক। তারা দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে মরুভূমি, পাহাড় আর বিভিন্ন দেশের সীমান্ত পাড়ি দিয়ে পবিত্র মক্কায় পৌঁছেছেন।
ইতোমধ্যে তাদের মক্কায় পৌঁছানোর ভিডিও ও ছবি সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকেই এই কর্মকে গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানাচ্ছেন। কেউ কেউ বলেছেন, এই যাত্রা প্রমাণ করেছে, ইচ্ছা ও ঈমান থাকলে পথ কোনো বাধাই নয়।
সৌদি হজ কর্তৃপক্ষ জানায়, বিমান, নৌপথ বা এমনকি ঘোড়ায় করেই হোক—প্রত্যেক হাজির জন্যই সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করা হবে। ২০২৫ সালে প্রায় ১৮ লাখ হাজি হজ পালন করবেন। তাদের মধ্যে এই চারজনের ব্যতিক্রমধর্মী যাত্রা বিশ্বজুড়ে আলোড়ন তুলেছে।
জানা গেছে, স্পেন থেকে যাত্রা শুরু করে ইতালি, স্লোভেনিয়া, ক্রোয়েশিয়া, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা, মন্টিনিগ্রো, কসোভো, উত্তর মেসেডোনিয়া, বুলগেরিয়া, গ্রিস, তুরস্ক ও সিরিয়া হয়ে সৌদি আরবে প্রবেশ করেছেন ইউরোপের চার সাহসী মুসলিম। আল কুরাইয়াত অঞ্চলের আল হাদিথাহ সীমান্তে পৌঁছালে তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা, সৌদি কফি, রিফ্রেশমেন্ট ও ফুল দিয়ে আন্তরিক অভ্যর্থনা জানান সৌদি কর্মকর্তারা।
চার মুসলিমের এই ঐতিহাসিক যাত্রার মূল অনুপ্রেরণা ছিলেন আবদুল্লাহ হার্নান্দেজ। যিনি ২৪ বছর বয়সে ইসলাম গ্রহণ করেন। ভূগোল নিয়ে পড়াশোনা করতে গিয়ে কোরআনের আয়াত তার হৃদয়ে গভীর প্রভাব ফেলে। ফলে তিনি প্রতিজ্ঞা করেন, পরীক্ষায় পাস করলে ইসলাম গ্রহণ করবেন ও প্রাচীন আন্দালুসীয় মুসলিমদের মতো ঘোড়ায় চড়ে হজে যাবেন।
সেই প্রতিজ্ঞা বাস্তবায়নে দুই বন্ধু আবদেলকাদের হারকাসি ও তারিক রদ্রিগেজ তার সঙ্গে যুক্ত হন। তারা প্রায় ৮,০০০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই হজযাত্রায় অংশগ্রহণ করেন, যা প্রায় সাড়ে তিন মাসের অধিক সময় ধরে চলেছিল। এ অভিযানে ইতিহাস ও বিশ্বাসের এক অনন্য সংমিশ্রণ তুলে ধরেছেন তারা।
তাই ইউরোপের চার মুসলিমের যাত্রা শুধু হজ নয়, বরং ৫০০ বছর আগের আন্দালুসিয়ান মুসলিম ঐতিহ্য পুনর্জাগরণের প্রতীক হিসেবেও বিবেচনা করা হচ্ছে।
এস এইচ/
Discussion about this post