পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার আরামকাঠি সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতির পরিচালক মো. রহমাত উল্লাহ গ্রাহকদের হাজার কোটি টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছেন। এ ঘটনায় গ্রাহকদের তোপের মুখে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন সমিতির ম্যানেজার মো. বেল্লাল মিয়াসহ অন্য কর্মচারীরা।
শনিবার সন্ধ্যায় ভুক্তভোগী গ্রাহকরা সমিতির পরিচালক রহমাত উল্লাহর গ্রামের বাড়ি উপজেলার আরামকাঠিতে বিক্ষোভ করেন। এ সময় তারা সমিতির ম্যানেজার মো. বেল্লাল হোসেন, মো. শাকিল হোসেন, নিখিল তহসিলদারসহ মোট চারজনকে অবরুদ্ধ করে রাখেন।
রোববার (২০ এপ্রিল) সকালে নেছারাবাদ থানায় মামলা দায়ের করা হয়। এ মামলায় পরিচালকসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, পরিচালকের পালিয়ে যাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে শনিবার মধ্যরাত থেকে সমিতির পরিচালকের পূর্ব জলাবাড়ি গ্রামের একটি প্রজেক্টে লুটপাট চলছে। গ্রাহক পরিচয়ে স্থানীয় অনেকে প্রজেক্ট থেকে ৪২টি গরু, ৮টি ভেড়া ও গরুর ফার্মের চালের টিন নিয়ে গেছেন। স্থানীয় কেউ কেউ প্রজেক্টের আম বাগানের আম বস্তা ভরে নিচ্ছেন। টিউবয়েল, ফার্নিচার, ধান ভাঙার মেশিন, নারকেল যে যা পাচ্ছে নিয়ে যাচ্ছেন।
ভুক্তভোগী গ্রাহক নিলুফা জানান, তিনি সমিতিতে এককালীন ১৪ লাখ টাকা জমা রেখেছেন। বিগত কয়েক মাস যাবৎ টাকা ফেরত চাচ্ছিলেন তিনি। শনিবার বিকেলে জানতে পারেন, সমিতি পরিচালক রহমত উল্লাহ পরিবার নিয়ে উধাও হয়েছেন।
রওশনারা নামের আরেক ভুক্তভোগী বলেন, ‘রাস্তায় চানাচুর ও ঝালমুড়ি বিক্রি করে রহমত উল্লাহর সমিতিতে এককালীন দুই লাখ এবং প্রতি মাসে চার হাজার টাকা করে আমানত রাখতাম। সব মিলিয়ে আমার ৮ লাখ টাকা জমা হয়েছিল।’ রিনা বেগম নামে আরেক ভুক্তভোগী বলেন, ‘মেয়ে বিয়ে দেওয়ার জন্য তিন লাখ টাকা সমিতিতে রেখেছিলাম।’
গ্রাহকের কাছে আটক রহমত মিয়ার সমিতির ম্যানেজার মো. বেল্লাল মিয়া বলেন, ‘শুনেছি তিনি চারদিন আগে পরিবার নিয়ে ঢাকায় গেছেন। সেই থেকে তার সঙ্গে আমাদের আর কোনো যোগাযোগ নেই। এখন গ্রাহকরা আমাদের আটকে রেখেছে।’
স্থানীয় জলাবাড়ী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নকিব উল্লাহ সরদার বলেন, এলাকার লোকদের রহমত উল্লাহর সমিতিতে টাকা রাখতে না বলেছিলাম। তারা কথা শুনেনি। এখন তারা আমানত হারিয়ে বিক্ষোভ করছে।’
উপজেলার সমবায় কর্মকর্তা মো. হাসান রকি বলেন, ‘রহমত উল্লাহর সমিতির লাইসেন্স বরিশাল বিভাগ থেকে করা। তারা আমাদের আইন মানতো না। শুনেছি এখন নাকি সমিতির পরিচালক পালিয়েছেন।’
নেছারাবাদ থানার ওসি মো. বনি আমীন বলেন, ‘বিষয়টি শুনেছি। আমি পুলিশ পাঠিয়ে খবর নিচ্ছি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এ ইউ/
Discussion about this post