শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) ইরানে একটি ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে বলে বিবিসির মার্কিন সহযোগী সিবিএস নিউজকে তথ্য দেন দু’জন মার্কিন কর্মকর্তা। শনিবার (১৩ এপ্রিল) ইসরায়েলি ভূখণ্ডে আক্রমণের পর থেকেই দেশটির পাল্টা জবাবের হুঁশিয়ারিতে সর্বোচ্চ সতর্কতায় ছিল ইরান।
এদিন ভোররাতে দেশটির ইসফাহান শহরে বিস্ফোরণের ঘটনাগুলো ঘটে। রাজধানী তেহরান থেকে এই প্রদেশের দূরত্ব সাড়ে তিনশো কিলোমিটার। তবে ইসফাহান বেশ গুরুত্বপূর্ণ প্রদেশ, কারণ ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো এখানে অবস্থিত। দেশটির অন্যতম বড় সামরিক বিমান ঘাঁটিও রয়েছে এখানে। আর প্রদেশের নাতানজ্ শহরটিকে ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচির কেন্দ্রবিন্দু বলা চলে।
দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন “নির্ভরযোগ্য সূত্রের” কথা উল্লেখ করে দাবি করেছে সেখানকার পারমাণবিক স্থাপনাগুলো “পুরোপুরি নিরাপদেই” আছে। ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন আইআরআইবি “নির্ভরযোগ্য” সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, কয়েকটি মিনি ড্রোনকে প্রতিহত করতে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় করা হয়। এর ফলেই দেশের কয়েকটি অঞ্চলে প্রচণ্ড শব্দ শোনা গেছে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় টিভির বরাতে বিবিসি জানিয়েছে, ইসফাহান শহরের আকাশে তিনটি ড্রোন পর্যবেক্ষণ করা হয়েছিল। আর রয়টার্সের বলছে, দেশের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় হওয়ার পরে ওই তিনটি ড্রোন ধ্বংস করা হয়। এর আগে, আধা-সরকারি ফারস বার্তা সংস্থা জানিয়েছে, ইসফাহানের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে “বিস্ফোরণের শব্দ” শোনা গেছে।
এদিকে ইরানের রাষ্ট্রীয় টিভির সংবাদদাতা জানিয়েছেন ইসফাহান শহর ‘নিরাপদ’ রয়েছেন। বিবিসি বলছে, ইরানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারকারী সংস্থা আইআরআইবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে একটি ভিডিও পোস্ট করেছে। সেখানে একজন সাংবাদিককে ইসফাহান শহরের কেন্দ্রস্থলে একটি ভবনের শীর্ষে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে। তিনি বলেছেন, ‘শহর নিরাপদ এবং সুস্থ, মানুষ তাদের স্বাভাবিক জীবনযাপন করছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘কয়েক ঘণ্টা আগে আকাশে শব্দ শোনা গিয়েছিল। আমরা যা জানি, ইসফাহানের আকাশে একাধিক মিনি ড্রোন উড়ছিল, পরে তাদের লক্ষ্যবস্তু করা হয়।’ তিনি জানান, এখন পর্যন্ত প্রাদেশিক কর্তৃপক্ষ আমাদের কোন তথ্য দেয়নি। কিছু আউটলেট বলেছিল ইসফাহানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে, কিন্তু আমাদের গবেষণার ভিত্তিতে এই তথ্যটি মিথ্যা, কোন স্থানকেই লক্ষ্যবস্তু করা হয়নি।”
এদিকে সিরিয়ায় সামরিক অবকাঠামোগুলোতেও বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে আল জাজিরা। ইরানের সরকারি বার্তাসংস্থা আইআরএনএ জানিয়েছে, সিরিয়ায় সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে একের পর এক বিস্ফোরণ হয়েছে।
Discussion about this post