পঞ্চগ্রাম ইউনিওনের রামদাস গ্রামের মজদের আড়া নামে খ্যাত টিলার উপর কয়েকশত বছরের পুরানো পাইকড় গাছের মরা কংকালের ফাঁক দিয়ে উঁকি মারছিলো লাল ইটের আবরন। ইতিহাস হলো অতীতের ঘটনার এক রুপ যা মানুষ মেনে নিতে রাজি হয়েছে। এমন একটি ইতিহাস হচ্ছে লালমনিরহাট জেলার হারানো মসজিদ বা সাহাবা মসজিদের আবিষ্কার।
স্থানীয়রা বলেন,১৯৮৭ সালে পাইকড় গাছটি কেটে ফেলা হলে স্তূপকৃত ইটের ডিবি থেকে গ্রামবাসি যারতার মতো করে ইট নিতে থাকেন। অত্র জমির মালিক ও তাদের ভাইয়েরা সহ গ্রামের লোকজন মিলে মহিষের গাড়ি ভরে ৩২ গাড়ি লাল ইট খুলে নিয়ে ঘরের কাজে লাগান। তাদের ধারনা ছিল পুরাতন কোনো মন্দির হয়ে থাকবে হয়তো।
মসজিদটির সহ সভাপতি দবিয়ার উদ্দিন বলেন, গ্রামবাসি যখন ইট খুলতে শুরু করেন তখন আইয়ুব আলী নামে এক ব্যক্তি দেখতে পান সামনের দিকে পদ্মফুলের মত নকশা করা কিছু টুকরো। বাড়িতে নিয়ে পানিতে ধুয়ে ভালো ইট আলাদা করেন। একটি ইট বা টুকরোয় অনুভব করেন উঁচু নিচু। ভালো করে ধুয়ে দেখতে পান আরবিতে লেখা পরে তিনি স্থানীয় আলেম মওলানাদের কাছে নিয়ে গেলে তারা পরীক্ষা নিরিক্ষা করে দেখেন আরবিতে লিখা ‘ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ’ নীচে হিজরি সন ৬৯। এবং অভিজ্ঞদের দেখান সকলেই অভিভূত। জায়গাটিতে যে মসজিদ ছিলো তা তারা নিশ্চিত হন। তখন সতর্কতার সাথে খনন কাজ করে দেখতে পান ১৩ ফুট বাই ৯ ফুট প্রসস্থ মসজিদের আদল। তখন থেকে তার নাম হয় হারানো মসজিদ বা সাহাবা মসজিদ।
স্থানীয় বাসিন্দা ও মসজিদটির পরিচালক জোবায়ের হাসান বলেন, হযরত সাদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস, হযরত কায়েস ইবনে হুজায়ফা, হযরত ওরওয়াহ ইবনে নওফেল, হযরত আবুল কায়েস ইবনে হারেসা (রাঃ) এই চারজন সাহবার কথা ইসলামি বিশ্বকোষে লিপিবদ্ধ আছে যে তারা এতদ অঞ্চলে ইসলামের দাওয়াতি কাজের প্রথম কাফেলা। তিস্তা পারে রংপুরের লালমনিরহাটের মজদের আড়ায় আবিস্কৃত মসজিদটি সেই পুন্যাত্মা সাহাবাগনের দাওয়াতি মিশনের অখন্ডনীয় স্মৃতি।
এ এ/
Discussion about this post