চলতি বছর নভেম্বরের নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ট্রাম্প এবং ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী হবেন বাইডেন। ।অর্থাৎ নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে লড়তে দলীয় প্রার্থী বাছাইয়ের ভোটাভুটিতে (প্রাইমারি) জয় নিশ্চিত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মনোনয়ন চূড়ান্ত হলে ৭০ বছরের মধ্যে এই প্রথম আগের নির্বাচনের দুই প্রার্থীর মধ্যে দ্বিতীয়বার প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেখতে যাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের ভোটাররা।
২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সাবেক প্রেসিডেন্ট ও রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী জো বাইডেনের দ্বৈরথ দেখার সুযোগ হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্ববাসীর। ২০২৪ সালেরও নির্বাচনেও তার পুনরাবৃত্তি ঘটতে যাচ্ছে।
মঙ্গলবার রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেটিক— উভয় দলের নীতি নির্ধারকরা প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের চুড়ান্ত প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ শেষ করেছেন বলে জানিয়েছে বিবিসি। উভয় দলই এ সম্পর্কিত আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবে আসছে গ্রীষ্মে।
ডেমোক্রেটিক পার্টি থেকে মনোনয়ন পেতে প্রাইমারিতে ১ হাজার ৯৬৮ জন দলীয় প্রতিনিধির ভোটের প্রয়োজন ছিল বাইডেনের। স্থানীয় সময় গত মঙ্গলবার জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের প্রাইমারির ফলাফল আসতে শুরু করলেই প্রয়োজনীয় ভোট নিশ্চিত হয়ে যায় তাঁর।
রিপাবলিকান পার্টি থেকে মনোনয়ন পেতে ট্রাম্পের ১ হাজার ২১৫ জন দলীয় প্রতিনিধির ভোট প্রয়োজন ছিল। মঙ্গলবার জর্জিয়াসহ চার অঙ্গরাজ্যের ভোটে বাইডেনের কয়েক ঘণ্টা পরই ট্রাম্পও প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভোট নিশ্চিত করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম বাইডেন-ট্রাম্পের আসন্ন এই দ্বৈরথকে বলছে ‘ইলেকশন রিম্যাচ’ এবং গত নির্বাচনে দুই প্রার্থীকে ঘিরে যেমন টানটান উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছিল, এবারও তার পুনরাবৃত্তি ঘটতে চলেছে বলে মনে করছেন অধিকাংশ মার্কিন রাজনীতি বিশ্লেষক। তাছাড়া বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে দলীয় প্রার্থী বাছাই ভোটে বাইডেন এবং ট্রাম্প যে ব্যবধানে প্রতিদ্বন্দ্বিদের পরাজিত করেছেন, তাতেও এমন ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওয়াশিংটনে এক ভাষণে ৮১ বছর বয়সী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, ডেমোক্রেটিক সমর্থকরা যে তাকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের চুড়ান্ত প্রার্থী হিসেবে বেছে নিয়েছেন, তাতে তিনি সম্মানিত এবং বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র এমন এক সময়ে এসে পৌঁছেছে, যখন দেশের গণতন্ত্রের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে ‘ট্রাম্প হুমকি’।
তিনি আরও বলেন, ‘বিগত সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি, অর্থনীতি ও মূল্যবোধ যে যে ব্যাপক বিপর্যয়ের আশঙ্কার মুখে পড়েছিল, সেই অবস্থা থেকে আমরা ঘুরে দাঁড়িয়েছি এবং সামনের দিকে অগ্রসর হচ্ছি।’
‘কিন্তু এই অগ্রযাত্রা এখন মাঝামাঝি পর্যায়ে রয়েছে এবং আমি বিশ্বাস করি যে মার্কিন জনগণ এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেবেন না যা এই যাত্রাকে থামিয়ে দিতে পারে।’
একই দিন রিপাবলিকান পার্টির এক জনসভায় ৭৭ বছর বয়সী ট্রাম্প বর্তমান প্রেসিডেন্টের সমালোচনা করে বলেন, বর্তমান প্রেসিডেন্টের আমলে যুক্তরাষ্ট্র সংকটের ঘূর্ণাবর্তে পড়েছে এবং এই অবস্থা থেকে দেশ-জাতিকে উদ্ধারের জন্য প্রয়োজন কঠোরতর অভিবাসন আইন, সীমান্ত সিলগালা করে দেওয়া এবং রেকর্ড সংখ্যক অভিবাসীকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো।
পাশপাশি ট্রাম্প আরও বলেন, তিনি নির্বাচিত হলে দেশ থেকে অপরাধ নির্মূল করা, অভ্যন্তরীণ জ্বালানির উৎপাদন বাড়ানো , বিদেশি আমদানির ওপর কর বৃদ্ধি এবং রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধেও ভূমিকা রাখবে তার প্রশাসন। তবে তিনি এবং তার নেতৃত্বাধীন প্রশাসন সর্বক্ষেত্রে ‘যুক্তরাষ্ট্র প্রথম’ নীতি মেনে চলবেন।
এস আর/
Discussion about this post