দুবাইয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় সাইফুল ইসলাম নামের এক বাংলাদেশীর মৃত্যু হয়েছে। সেখানে তিনি একটি প্রতিষ্ঠানে পরিচ্ছন্নতা কর্মীর কাজ করতেন। গত ৩১ জানুয়ারি তার মৃত্যু হলেও শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্তও তার লাশ দেশে ফেরানো সম্ভব হয়নি।
মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম খালিজ টাইমস এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, সাইফুল ইসলামের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে মাত্র ১ হাজার ২০০ দিরহাম (৩৫ হাজার টাকা) দিতে চাচ্ছে ওই প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু ৩৫ হাজার টাকার ক্ষতিপূরণের মাধ্যমে তার মরদেহ বাংলাদেশে পাঠাতে দেবেন না বলে জানিয়েছে নিহতের চাচাতো ভাই সালাউদ্দিন।
তিনি বলেছেন, “তার মরদেহ মর্গে পড়ে আছে। সে যে প্রতিষ্ঠানের হয়ে কাজ করত সেটি সব কাগজপত্র সম্পন্ন করে এখন তার মরদেহ বাংলাদেশে পাঠাতে চাচ্ছে। কিন্তু তার পাওনা পরিশোধ করছে না। সে এই প্রতিষ্ঠানের হয়ে এক বছর কাজ করেছে। তার জীবনের মূল্য কি মাত্র ১ হাজার ২০০ দিরহাম? পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ এবং পাওনাদি পরিশোধ না করা পর্যন্ত আমরা মরদেহ পাঠাতে দেব না।”
বাংলাদেশ থেকে সাইফুলের স্ত্রী জেসমিন জানিয়েছেন, তাদের তিন বছর বয়সী একটি মেয়ে এবং সাত মাস বয়সী একটি ছেলে রয়েছে। এই দুটি শিশুকে নিয়ে তিনি কি করবেন এ নিয়ে এখন চিন্তায় পড়েছেন। তিনি প্রশ্ন করেছেন, মাত্র ৩৫ হাজার টাকা দিয়ে কীভাবে এ শিশুদের বড় করবেন।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ কনস্যুলেটের ফার্স্ট সেক্রেটারি মোহাম্মদ আরিফুর রহমান বলেছেন, তারা এ বিষয়টি তদন্ত করছেন। তিনি জানিয়েছেন, সাইফুল বৈধভাবে দুবাইয়ে এসেছিলেন। ফলে ক্ষতিপূরণ হিসেবে তার পরিবার তিন লাখ টাকা পাবে। এছাড়া মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনতে যে ৩৫ হাজার টাকা খরচ হবে সেটিও ওই প্রতিষ্ঠান দেবে। সাইফুলের ছোট ভাইও গত বছর সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান। এর এক বছর পর তিনিও দূর প্রবাসে একইভাবে নিহত হয়েছেন।
খালিজ টাইমস জানিয়েছে, যেদিন সাইফুল মারা যান সেদিন সাইকেলে করে কাজে যাচ্ছিলেন তিনি। সে সময় কোনো গাড়ি তাকে ধাক্কা মেরে পালিয়ে যায়। কিন্তু এখন পর্যন্ত ওই গাড়ি বা এটির চালককে শনাক্ত করা হয়নি। এর আগেই মরদেহ বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে।
সাইফুলের পরিবার জানিয়েছে, তারা চায় ওই ঘাতক গ্রেপ্তার হোক এবং তার কাছ থেকেও ক্ষতিপূরণ (ব্লাড মানি) আদায় করা হোক।
সূত্র: খালিজ টাইমস
এ এস/
Discussion about this post