জনশক্তি রপ্তানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিতে (বায়রা) প্রশাসক নিয়োগ দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বাণিজ্য সচিবকে এই নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে আদেশের অনুলিপি পাওয়ার ৪ সপ্তাহের মধ্যে প্রশাসক নিয়োগ দিয়ে নির্বাচন সম্পন্ন করতে বলেছেন আদালত।
সোমবার (২ ডিসেম্বর) বায়রার নির্বাচন সংক্রান্ত রুল নিষ্পত্তি করে বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মোবিনা আসাফের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। এদিন আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, আহসানুল করিম, গাজী কামরুল ইসলাম সজল ও মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া।
অন্যদিকে বায়রার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী জমির উদ্দিন সরকার, রোকন উদ্দিন মাহমুদ, রুহুল কুদ্দুস কাজল ও কায়সার কামাল।
আদেশের বিষয়ে আইনজীবী ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া জানান, বায়রার নির্বাচনী বোর্ড ও নির্বাচনী আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান দুইজনই পলাতক। ভোটার তালিকাও হালনাগাদ হয়নি। সেই সঙ্গে সংগঠনটির পাঁচ শতাধিক সদস্যকে ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। এছাড়া কার্যনির্বাহী কমিটিও মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে পড়েছে।
তিনি জানান, কার্যনির্বাহী কমিটির মেয়াদ ছিল গত ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। তবে ওইদিনই ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত (২২ দিন) কমিটির মেয়াদ বাড়ানো হয়। এরপর ৩০ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় দফায় আরও তিন মাস মেয়াদ বাড়ানো হয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাণিজ্য সংগঠন বিধিমালা, ১৯৯৪ এর ১৪ বিধি অনুসারে কার্যনির্বাহী কমিটির মেয়াদ বাড়ানো হলে, কেন মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে তার ব্যাখ্যা থাকতে হয়। কিন্তু আদালতের সামনে সংশ্লিষ্টরা কোনো ব্যাখ্যা উপস্থাপন করতে পারেনি। শুধু তাই নয়, ২৭ সদস্যের কার্যনির্বাহী কমিটি থেকে সিনিয়র সহ-সভাপতিসহ ১১ জন পদত্যাগ করেছেন। ফলে আদালত রুল নিষ্পত্তি করে বায়রায় প্রশাসক নিয়োগ দিয়ে নির্বাচন সম্পন্ন করতে নির্দেশ দিয়েছেন।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাণিজ্য সংগঠন বিধিমালা, ১৯৯৪ এর ১৪ বিধি অনুসারে, বিদ্যমান বায়রার কার্যনির্বাহী কমিটি নির্বাচনের ক্ষেত্রে অন্তত ৯০ দিন আগে নির্বাচনী বোর্ড ও ৩ সদস্যের একটি নির্বাচনী আপিল বোর্ড গঠন করার বিধান রয়েছে। তা না করে আগামী ২৪ ডিসেম্বর নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করে বায়রা গত ২৪ অক্টোবর তফসিল ঘোষণা করে।
পরে এই তফসিল চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্ট রিট করেন বায়রার একজন সদস্য। শুনানির পর গত ৫ নভেম্বর নির্বাচন ৬ মাসের জন্য স্থগিত করার পাশাপাশি তফসিলের বৈধতা প্রশ্নে রুল দেন হাইকোর্ট। পরে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আবেদন করে বায়রা।
ওই আবেদনের শুনানির পর গত ১১ নভেম্বর হাইকোর্টের আদেশে স্থিতাবস্থা (স্টেটাসকো) দেন আপিল বিভাগ। পরবর্তীতে গত ১৯ নভেম্বর স্থিতাবস্থা অব্যাহত রেখে হাইকোর্টকে রুল নিষ্পত্তির নির্দেশ দেয়া হয়। সেই ধারাবাহিকতায় রুল শুনানি করে সোমবার রায় দিলেন উচ্চ আদালত।
এ ইউ/
Discussion about this post