দেশে নিজের জমিতে বাড়ি করার স্বপ্ন দেখেন বহু প্রবাসীরা। তবে সে স্বপ্ন অধরা রয়ে গেছে বহু প্রবাসীর। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) অনলাইন সার্ভারে পর্যায়ক্রমে ভূমি ব্যবহারের ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করেন বহু প্রবাসী। তবে পাসপোর্ট নয় কেবল এনআইডি দিয়ে আবেদন করার অপশন রাখায় ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন প্রবাসীরা।
অনেক প্রবাসী দেশের বাইরে থাকা সত্বে চাইলেও এনআইডি বানাতে পারছেন না বিদেশে এনআইডি বানানো অপশন না থাকাসহ নানাবিধ কারণে। রাজধানীতে প্রতিবছর ভূমি ব্যবহারের জন্য গড়ে ২৫ থেকে ৩০ হাজারের বেশি ছাড়পত্রের আবেদন জমা হয়। এরপরে পর্যায়ক্রমে ১০ হাজার ভবনের নকশার অনুমোদন দেয় রাজউক। গত সেপ্টেম্বর মাসে রাজউকের আটটি অঞ্চলে নকশা অনুমোদন, ভূমি ব্যবহার ছাড়পত্র ও ভূমি একত্রীকরণের আবেদন জমা পড়েছে ৩ হাজার ২০১টি। এর মধ্যে নিষ্পত্তি হয়েছে ১ হাজার ৬৯০টি। এর বেশির ভাগই সাভার, ভুলতা, পূর্বাচল উপশহর ও কেরানীগঞ্জ এলাকার। তবে নতুন সার্ভারে নতুন নিয়মে এনআইডি কার্ড বাধ্যতামূলক সংযোজনের ফলে ছাড়পত্রের আবেদন হার কমে গেছে। বিশেষ করে প্রবাসীদের এনআইডি কার্ড না থাকায় তারা এখন আবেদন করতে পারছে না।
এ প্রসঙ্গে মনোয়ার হোসেন নামের এক কুয়েত প্রবাসী জানান, ‘নতুন নিয়মে এনআইডি কার্ড বাধ্যতামূলক সংযোজনের ফলে আমি আবেদন করতে পারছি না। রাজউকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলেছেন জাতীয়পত্র বানিয়ে এরপর আবেদন করেন নইলে কিছুই করার নেই। আমি অল্প কয়দিনের ছুটিতে দেশে এসেছি কিন্তু বর্তমানে জাতীয় পরিচয় পত্র বানানো অসম্ভব। রাজউক দুইদিন পর পর নতুন নিয়ম বের করে আর ভোগান্তিতে পড়তে হয় আমাদের।’
ঢাকায় ভবন নির্মাণে ভূমি ব্যবহার ছাড়পত্র, নকশা অনুমোদন সেবা পেতে বিড়ম্বনার শিকার হননি, এমন নাগরিকের সংখ্যা খুব কম বলা যায়। প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী নকশা অনুমোদন ও ভূমি ব্যবহার ছাড়পত্রের জন্য আবদেন করা লাগে। কিন্তু অনুমোদন কবে মিলবে তা কেউ জানে না। মাসের পর মাস এক টেবিল থেকে আরেক টেবিলে ফাইল ঘোরে। কিছু ক্ষেত্রে ফাইলের হদিসও পাওয়া যায় না। আবার নানান অজুহাতে প্রতারণার শিকার হন নাগরিকেরা। এছাড়া এই সেবা ঘিরে সক্রিয় একটি দালালচক্র। ভোগান্তি থেকে গ্রাহকদের মুক্তি দিতে উদ্যোগ নিয়েছিল রাজউক। তারা সেবা কার্যক্রম শতভাগ অনলাইন করতে চালিয়ে যাচ্ছে কার্যক্রম।
আবেদনে প্রবাসীদের এনআইডি ব্যবহারের ফলে ভোগান্তির পোহানোর বিষয়ে রাজউকের চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান মিঞা বলেন, ‘নতুন কোন জিনিসের সঙ্গে মানিয়ে নিতে শুরুতে আমাদের সমস্যা হবেই। সবারই জাতীয় পরিচয়পত্র থাকা বাধ্যতামূলক এবং সরকারি নির্দেশ মোতাবেক সব দাপ্তরিক কাজে জাতীয় পরিচয়পত্র থাকা বাধ্যতামূলক। প্রবাসীদের যাদের সমস্যা হচ্ছে তাদের জন্য আমাদের ভাবতে হবে।’
সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক
এফএস/
Discussion about this post