চট্টগ্রামে মর্মান্তিক এক সড়ক দূর্ঘটনায় ওমান প্রবাসীর স্ত্রী সন্তানসহ প্রাণ হারিয়েছে পরিবারের ৭ সদস্য । নিহতদের সবাই একটি শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠানে যাওয়ার উদ্দেশে রওনা হয়েছিলেন।
মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে হাটহাজারী উপজেলার চারিয়া ইজতেমা মাঠ এলাকায় নাজিরহাট-হাটহাজারী সড়কে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ এ দূর্ঘটনাটি ঘটে। শহরমুখী বাসের বিপরীত দিক থেকে আসা ওই অটোরিকশাটি প্রবাসী নারায়ণের পরিবারকে বহন করছিলো। মুখোমুখি সংঘর্ষে বাসের ধাক্কায় অটোরিকশাটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই অটোরিকশা যাত্রীদের সাতজন নিহত হয়।
একই ঘটনায় আহত হওয়া অপর দুজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।ঘটনার পর বাস চালক পালিয়ে যান। পুলিশ বাস ও দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া টেক্সিটি জব্দ করেছে।
ঘটনায় নিহতরা হলেন— চন্দনাইশের জোয়ারা ইউনিয়নের মোহাম্মদপুর ধোপাপাড়া এলাকার প্রবাসী নারায়ণ দাশের স্ত্রী রীতা রানী দাশ (৩৮), তার বাক্ প্রতিবন্ধী মেয়ে কাঞ্চনাবাদ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবারের এসএসসি পরীক্ষার্থী শ্রাবন্তী দাশ (১৭), বর্ষা দাশ (৯), যমজ দুই সন্তান দ্বীপ দাশ (৪), দিগন্ত দাশ (৪), নারায়ণের বড় ভাই প্রতিবন্ধী শম্ভুর ছেলে বিপ্লব দাশ (৩২) ও নারায়ণের বোন সচীন্দ্র দাশের স্ত্রী চিনু দাশ (৫৫)।
এছাড়া নিহত চিনুর ছেলে বাপ্পা দাশ (৩২) সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক বিপ্লব মজুমদার (২৮) চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তার বাড়ি ফটিকছড়ি উপজেলার বৈদ্যারহাট এলাকায়।
এদিকে মুহূর্তেই স্ত্রী সন্তানকে হারিয়ে নিঃস্ব ওমান প্রবাসী নারায়ণ দাশ পাগলপ্রায় হয়ে দেশে ফিরছেন। পরিবারের প্রিয় সদস্যদের নিথর মুখখানা একনজর দেখতে ও সৎকারে অংশ নিতে বাড়িতে ছুটে আসেন নারায়ণ। গাড়ি থেকে নেমে হাউ-মাউ করে কেঁদেই যাচ্ছিলেন তিনি।
জোয়ারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিন আহমদ চৌধুরী রোকন তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করলে নারায়ণ বলেন, আমার সুখের সংসার ছিল, এখন সব শেষ। আমি এখন কী নিয়ে বাঁচবো? চেয়ারম্যান আমিন আহমেদ চৌধুরী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, লাশগুলো তার ব্যক্তিগত অর্থায়নে সৎকার করার ব্যাবস্থা করা হবে।
Discussion about this post