আহমাদুল কবির, মালয়েশিয়া:
মালয়েশিয়ায়ও ভাষাশহীদদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করা হয়েছে। বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি)সকালে কুয়ালালামপুরস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন মহান শহীদ দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করে।
অনুষ্ঠানের প্রারম্ভে হাইকমিশন প্রাঙ্গণে প্রভাতফেরির মাধ্যমে হাইকমিশনের অস্থায়ী শহীদ মিনারের বেদীতে হাইকমিশনার মো. শামীম আহসান এর নেতৃত্বে হাইকমিশন পরিবারের সদস্যবৃন্দ পুস্পস্তবক অর্পণ করেন।
এ ছাড়া মালয়েশিয়ায় সফররত বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া চেম্বার অব কমার্সের নেতৃবৃন্দ,স্থানীয় কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ এবং সামাজিক, সাংস্কৃতিকসংস্থার সদস্যবৃন্দ পর্যায়ক্রমে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত এবং এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। অনুষ্ঠানে দিবসটিকে কেন্দ্র করে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী পৃথক বাণী দেন এবং এ দিবস উপলক্ষে প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের ধারণকৃত বক্তব্য প্রচার করা হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ তার বক্তব্যে ‘শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ স্মরণে বিভিন্ন দেশ এবং বিভিন্ন ভাষাভাষীর জনগোষ্ঠীকে নিয়ে আয়োজিত ভিন্নমাত্রিক এই অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য কুয়ালালামপুরস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, মাতৃভাষা আন্দোলন বাঙালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছে এবং স্বাধীনতার পথ দেখিয়েছে। তিনি ঐতিহাসিক মাতৃভাষা আন্দোলনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভূমিকার কথা গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন। তিনি আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য ভাষাগত ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের গুরুত্ব তুলে ধরেন তিনি।
অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. শামীম আহসান।
অনুষ্ঠানের মূল আলোচনা সভায় অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ, পরিচালক, সেন্টার ফর অল্টারনেটিভস, বাংলাদেশ এবং, মিসেস মাকি কাতসুনো-হায়াশিকাওয়া,কান্ট্রি ডিরেক্টর, ইউনেস্কো আঞ্চলিক অফিস, জাকার্তা এর ধারণকৃত বক্তব্য প্রচারিত হয়। অন্যান্য বক্তাদের মধ্যে ছিলেন প্রফেসর ড. অনিন্দিতা দাশগুপ্ত, বিভাগীয় প্রধান-স্কুল অফ লিবারেল আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেস, টেলরস ইউনিভার্সিটি।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে, নয়টি দেশের শিল্পীদের সমন্বয়ে একটি বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়। ভারত, মালয়েশিয়া, মালদ্বীপ, নাইজেরিয়া, রাশিয়ান ফেডারেশন, সুদান, তানজানিয়া, নেপাল এবং বাংলাদেশ হাই কমিশন পরিবারের সদস্যগণ এবং শিল্পীদের মনোমুগ্ধকর পরিবেশনা দর্শকদের বিমোহিত করে। একই মঞ্চে বিভিন্ন দেশের শিল্পীদের বর্ণিল পরিবেশনা এক অনন্য সাংস্কৃতিক সম্প্রীতির বহিঃপ্রকাশ ঘটায়।
অনুষ্ঠানে হাইকমিশনার এর সহধর্মিণী, কর্মকর্তা এবং তাদের পরিবারবর্গ, বিভিন্ন দূতাবাসের কূটনীতিকগণ, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীগণ, সাংবাদিকবৃন্দ এবং বিপুল সংখ্যক প্রবাসী সদস্যগণ তাদের পরিবারসহ উপস্থিত ছিলেন।
এফএস/
Discussion about this post