মিনহাজুল আবেদিন নান্নু টানা আট বছর ধরে জাতীয় দলের প্রধান নির্বাচকের দায়িত্বে ছিলেন। তার সঙ্গী হিসেবে এই প্যানেলে ছিলেন হাবিবুল বাশার সুমন। দীর্ঘ দিন এই দায়িত্বে থাকার পর অবশেষে গেল ১২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হওয়া নবম বোর্ড মিটিংয়ে এই নির্বাচক প্যানেল ভেঙে দেওয়া হয়। সে সময় গাজী আশরাফ লিপুকে নতুন প্রধান নির্বাচক ঘোষণা করা হয় এবং তাকে সঙ্গী হিসেবে দেওয়া অনূর্ধ্ব ১৯ দলের নির্বাচক হান্নান সরকারকে।
সে সময় বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন জানিয়ে দেন নতুন প্যানেল দায়িত্ব নেবেন ১ মার্চ থেকে। সেই অনুসারে আজই প্রধান নির্বাচক হিসেবে শেষ দিন নান্নুর। আগামীকাল থেকে তাকে দেখা যাবে বোর্ডের ভিন্ন দায়িত্বে। তার আগে গতকাল গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলে জানিয়েছে নির্বাচক হিসেবে তার লম্বা সফরের কথা।
বুধবার বিসিবি ভবনের সামনে দীর্ঘ আট বছর ধরে প্রধান নির্বাচকের দায়িত্ব পালন করার বিষয়ে নান্নু বলেন, ‘সব মিলিয়ে ভালোই ছিল, ক্রিকেটে চড়াই-উত্রাই আছে, যেটা আমাদের সবাইকে মানতে হবে। তারপরও আমরা যতটুকু কাজ করেছি, সততা ও শৃঙ্খলার সঙ্গে। তো আমার ১০ বছরের পারফরম্যান্স বিশ্লেষণ করলেই বুঝতে পারবেন যে বাংলাদেশ এখন কোন স্থানে আছে।’
টাইগারদের প্রধান নির্বাচকের দায়িত্ব পালনকালে দলের খারাপ সময়গুলোতে আঙুল উঠত নির্বাচক প্যানেলের দিকেই। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কিংবা বিভিন্ন গণমাধ্যমে সমালোচনার বন্যা চলত নান্নু-সুমনদের নিয়েই। যেন ক্রিকেটারদের মাঠের সব ব্যর্থতা তাদেরই। তবে এসব নিয়ে আক্ষেপ নেই নান্নুর। এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘এটা (সমালোচনা) তো উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অনেকে করত সবাই জানে, সারা দেশবাসী জানে। সুতরাং এটা নিয়ে কোনো আক্ষেপ নেই। কাজের মূল্যায়নটাই সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ এবং এখন আমরা আরেকটি দায়িত্বে যাচ্ছি। তো আক্ষেপ নেই যথেষ্ট ভালোই কাজ করেছি। আমরা সন্তুষ্ট আমাদের প্যানেল নিয়ে।’
বাংলাদেশ জাতীয় দলের ওয়ানডে ফরম্যাটের দ্বিতীয় অধিনায়ক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু। ১৯৮৬ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে জাতীয় দলে অভিষেক হয় তার। জাতীয় দলের ইতিটাও হয় তাদের বিপক্ষেই ১৯৯৯ সালে। মাঝে ১৯৯০ সালে দুই ম্যাচের জন্য পালন করেন ওয়ানডে ফরম্যাটের অধিনায়কত্ব। তবে তার আগে ১৯৮৮ সালে জাতীয় দলের প্রথম অধিনায়ক ও বর্তমান প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ লিপুর সহ-অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তবে জাতীয় দল ছাড়লেও ২০০৪ সাল অবধি নিয়মিত ঘরোয়া লিগগুলোতে খেলতেন তিনি।
এরপর ২০০৫ সালে থেকে বিসিবিতে কোচ হিসেবে যুক্ত হন নান্নু। তখন থেকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দায়িত্বে দেশের ক্রিকেটের সঙ্গে রয়েছেন সাবেক এই ক্রিকেটার। এর আগে ২০১১ সালে সর্বপ্রথম নির্বাচক কমিটিতে আসেন নান্নু। তখন আকরাম খানের অধীনে কমিটির সদস্য ছিলেন তিনি। পরে ২০১৬ সালে তাকে করা হয় প্রধান নির্বাচক, তার সঙ্গে যোগ দেন হাবিবুল। এই জুটি লম্বা সময় ধরে কাজ করছিলেন। তবে এবার তাদের নির্বাচক প্যানেল থেকে সরিয়ে বিসিবির অন্য দায়িত্বে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
সর্বপ্রথম কয়েক দিন আগে হাবিবুল বাশার সুমনকে নারী উইংয়ের প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়, এবং সবশেষ গত পরশু জানা যায়, বিসিবির চিফ কো অর্ডিনেটর অব প্রোগ্রামার হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন নান্নু। এ বিভাগে মূলত হেড অব প্রোগ্রামার অস্ট্রেলিয়ান ডেভিড মুরসের সঙ্গে কাজ করবেন নান্নু। বিসিবির বিভিন্ন প্রোগ্রাম আয়োজন, গেম ডেভেলপমেন্ট, টুর্নামেন্ট এসব নিয়ে কাজ করবেন তিনি। সার্বিকভাবে ক্রিকেটের সবকিছুর উন্নতিতেই চোখ থাকবে তাদের।
এ এস/
Discussion about this post