দালালের খপ্পরে পরে প্রতারণার স্বীকার হয়েছেন গোলাপগঞ্জের মোল্লারচকের ১৬ জন যুবক। তাঁরা একযোগে ফেসবুক লাইভে এসে আগামী ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত আলটিমেটাম দিয়ে আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছেন।
শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার আছিরগঞ্জ বাজারে এক প্রতিবাদ সভা করে তাঁরা এমন হুমকি দেন।
অভিযুক্ত ট্রাভেলস কোম্পানির মালিক জহির উদ্দিন গোলাপগঞ্জের আছিরগঞ্জ বাজারের আমকোনা গ্রামের মৃত রফিক উদ্দিনের ছেলে। তিনি ওই বাজারের আজিজ ট্রাভেলস নামে একটি প্রতিষ্ঠানের মালিক। জহির উদ্দিন বিভিন্ন দেশে লোক পাঠান। এর আগে তাঁর মাধ্যমে ওই এলাকার বেশ কয়েকজন সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে গেছেন।
এখন ধারদেনার টাকা নিয়ে দুশ্চিন্তা, বাড়িভিটাও নেই টিপু সুলতানের। তিনি বলেন, ‘বাড়িভিটা বেচে ও ধারদেনা করে ৭ লাখ টাকা দেই আজিজ ট্রাভেলসের মালিক জহির উদ্দিনের কাছে। এলাকার হওয়ায় তাকে বিশ্বাস করতে দ্বিধা করিনি। যার কারণে আমি, আমার চাচাতো ভাই আলফাছ উদ্দিন ও ভাতিজা আব্দুল্লাহ আল নাহিদ একসাথে চুক্তিবদ্ধ হয়ে বিভিন্ন ধাপে টাকা দেই। প্রথমে পাসপোর্ট জমা দেওয়ার সময় আমরা তিনজন মিলে দেড় লাখ টাকা দেই। পরে সরাসরি তার হাতে সাড়ে ৩ লাখ টাকা করে তিনজনে ১০ লাখ ৫০ হাজার টাকা দেই। সবশেষ পূবালী ব্যাংকের মাধ্যমে জনপ্রতি ৩ লাখ করে ৯ লাখ টাকা দেই গত জানুয়ারির ২৬ তারিখ।’
গত ফেব্রুয়ারির ১২ ও ১৩ তারিখের ফ্লাইট মিস হওয়ার কারণে ২৩ ফেব্রুয়ারি যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে আর কোনো খোঁজখবর নেই জহির উদ্দিনের। প্রতারিত হয়েছেন ১৬ জন যুবক।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জহির উদ্দিন রোমানিয়া ও তিউনিসিয়ায় পাঠাবেন বলে গোলাপগঞ্জের ১৬ জনের কাছ থেকে তাঁদের পাসপোর্ট ও সব মিলিয়ে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নেন। পরে টাকা ও পাসপোর্ট নিয়ে লাপাত্তা হয়ে যান।
প্রতারিত যুবকেরা হলেন—১০ নং উত্তর বাদেপাশা ইউনিয়নের খাগাইলের আব্দুস সোবহান, আলী হোসেন, আমকোনার সাইদ আহমদ, ফখর মিয়া, আব্দুল ওদুদ, মোল্লারচকের আলফাছ উদ্দিন, টিপু সুলতান, আব্দুল্লাহ আল নাহিদ, বাগলা গ্রামের নাসির উদ্দীন, হীরা মিয়া, তিলপাড়া ইউনিয়নের দেবারাই গ্রামের দুলাল মিয়া, বুধবারী বাজারের চন্দর পুরের আলী, কালপাড়া গ্রামের কামরান হোসেন কবির, আহমদপুরের আলী হোসেনসহ আরও দু’জন।
টাকা চাওয়ায় সম্প্রতি জহিরের চাচা নুর উদ্দিন তাঁদের ও আত্মীয়–স্বজনদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগে মামলা করে হয়রানি করছেন বলেও প্রতিবাদ সভায় অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।
Discussion about this post