বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পরই এদেশে হত্যার রাজনীতি শুরু হয় বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়, গণতন্ত্রের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) সকাল ১০টার পর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডের সভার সূচনা বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, জনগণের অধিকার আদায়ের জন্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই সংগ্রাম করে গেছে। আর অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে গিয়েই আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী জীবন দিয়েছে। আওয়ামী লীগ চায় দেশে গণতন্ত্র থাকুক এবং রাজনৈতিক দলগুলো স্বাধীনভাবে কাজ করুক। তবে বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে আওয়ামী লীগ সেই রাজনীতি করার সুযোগ পায়নি। সারাদেশে দলের ২১ হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে বিএনপি।
অতীতের মতো মনোনয়নের ব্যবসা করতে হলেও বিএনপিকে নির্বাচনে আসার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, কার কত দম সেটাও দেখতে চায় আওয়ামী লীগ।
এসময় হুঁশিয়ারি দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি-জামায়াত নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করলেও আওয়ামী লীগের শক্তি দেশের জনগণ। কেউ নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করলে তার পরিণতি ভালো হবে না।
দেশবাসীকে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনের বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।
তিনি বলেন, ২০১৪ সালে আত্মবিশ্বাস ছিল না বলেই জ্বালাও-পোড়াও করে তারা নির্বাচনে আসেনি। ২০১৮ সালের নির্বাচন নিয়ে অপবাদ দিলেও কেউ এখন পর্যন্ত অনিয়মের একটি সুনির্দিষ্ট প্রমাণ দেখাতে পারেনি। এখনো তারা অগ্নিসন্ত্রাস করছে। আসলে মানুষের জানমালের ক্ষয়ক্ষতি করে এবং মানুষকে হত্যা করে সরকারে যাওয়া যায় না।বিএনপি মিছিল-মিটিং করলেও আওয়ামী লীগ সেখানে বাধা দেয়নি। মিছিল-মিটিং এবং সুস্থ রাজনীতির সময় বিএনপির গ্রহণযোগ্যতা বাড়ছিল, ভালো জমায়েতের পাশাপাশি মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতাও তো বাড়ছিল। কিন্তু যখন তারা আবার সহিংসতার সেই পুরোনো রূপে ফিরে গেলো তখন তারা আবার জনবিচ্ছিন্ন সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে জনগণের কাছে পরিচিতি পেয়েছে।
শেখ হাসিনা প্রশ্ন তোলেন, আজ আন্তর্জাতিকভাবে অনেক দেশ কথা বললেও যখন মিলিটারি ডিক্টেটররা মানুষের অধিকার ক্ষুণ্ন করেছিল তখন তাদের চেতনা কোথায় ছিল? দেশের জন্য কাজ করেন জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, তিনি কোনো দেশের তাবেদারি করেন না।
এসময় নিজের সরকারের উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, একসময় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে থাকা নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন করতে আওয়ামী লীগ সরকার আইন করে দিয়েছে। এতে ৮২টি সংশোধনী এনে অবাধ নিরপেক্ষ এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের উপযোগী করা হয়। সেই আইনের অধীনে এখন দেশে নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়।
তিনি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের পর এখন আওয়ামী লীগের লক্ষ্য দক্ষ জনগোষ্ঠী তৈরি করে স্মার্ট সরকার এবং স্মার্ট সোসাইটি গঠন করা।
সকাল ১০টার পর আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডের সভায় শুরু হয়। সভায় রাজশাহী, রংপুর ও খুলনা বিভাগের সংসদীয় আসনগুলোর মনোনয়ন চূড়ান্ত করা হবে। টানা তিনদিন চলবে সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের এ সভা।
Discussion about this post