ফ্রান্সে বিক্ষোভ করল ফুড ডেলিভারি কাজে নিয়োজিত বাংলাদেশি কর্মীরা। মজুরি বাড়ানোসহ বিভিন্ন দাবিতে ২ ও ৩ ডিসেম্বর ধর্মঘটের পাশাপাশি বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন তারা।
ফ্রান্সের জাতীয় শ্রমিক ইউনিয়ন ‘জেনারেল কনফেডারেশন অফ লেবার’ (সিজিটি) এবং বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের উদ্যোগে এই বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়।
স্থানীয় সময় শনিবার (২ ডিসেম্বর) দুপুরে প্যারিসের জুরেস পার্ক থেকে শুরু হয়ে বিক্ষোভ মিছিলটি গার্দোলিস্টে এসে সমাবেশে মিলিত হয়। এতে বিভিন্ন দেশের পাশাপাশি বাংলাদেশি কয়েকশ ফুড ডেলিভারি কর্মী অংশ নেয়।
কাজের মজুরি বাড়ানো, বকেয়া অর্থ পরিশোধ করা, উবারের যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লকড আছে তা খুলে দেওয়া, দ্রুত মজুরি পরিশোধ এবং ডেলিভারি ও উবারের কাজের সঙ্গে সম্পৃক্তদের আয়ের ওপর অতিরিক্ত ট্যাক্স প্রত্যাহারের দাবিকে অগ্রাধিকার দিয়ে এ ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে বলে জানান আন্দোলনকারি শ্রমিক সংগঠনের নেতারা।
বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেওয়া প্রবাসী রাকিবুল ইসলাম (৩৯) বলেন, “খাবার ডেলিভারি কাজে নিয়োজিতদের অধিকাংশই অনিয়মিত অভিবাসী। ফলে তারা অন্যদের আইডি ভাড়ায় এনে কমিশন বা চুক্তিভিত্তিক কাজ করেন। এ অবস্থায় মজুরি না বাড়লে বেঁচে থাকা কষ্টকর।”
কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার বাসিন্দা রাকিবুল আরও বলেন, “আমরা এক হাজার ইউরো আয় করলে আইডি মালিককে দিতে হয় তিনশ থেকে সাড়ে চারশ ইউরো। তারপর পরিবহন খরচসহ নানাদিক ব্যয় রয়েছে। এই অবস্থায় ডেলিভারি কোম্পানিগুলোর নির্মম আচরণ আমাদের রাস্তায় নামতে বাধ্য করেছে।”
বৈরি আবহাওয়ার সঙ্গে ডেলিভারি কাজ ‘ওতপ্রোতভাবে জড়িত’ বলে উল্লেখ করেন সিলেটের জালালপুর ইউনিয়নের রুবেল আহমদ (৩৬)। তিনি ফ্রান্সে এসেছেন প্রায় তিন বছর, শুরু থেকেই খাবার ডেলিভারির কাজে নিয়োজিত।
রুবেল বলেন, “আজ থেকে এক বছর আগেও যে দূরত্বে ১০ ইউরো পাওয়া যেত, এখন সেই একই দূরত্বে ৪/৫ ইউরো দিচ্ছে।”
কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে উপস্থিত ছিলেন ফরাসি সংসদ সদস্য ডেনিয়েল সিমনেট, সিনেটর পিয়ারিক লাভনি, প্যারিসের ডেপুটি মেয়র ডেভিড বিলিলিয়ার্ড, সিজিটির কর্মকর্তা লুডো রিও এবং ভেলিভারি বিভাগের কর্মকর্তা মেহদি আল মান্দিলি।
বাংলাদেশিদের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন আন্দোলনের সমন্বয়ক ‘অ্যাসাইলাম অ্যান্ড ইমিগ্র্যান্ট সলিউশন অ্যাসোসিয়েশন’ (আইসা) এর প্রেসিডেন্ট উবায়দুল্লাহ কয়েছ, ‘বাংলা অটো ইকোল’ এর প্রধান কার্যনির্বাহী হোসেন সালাম রহমান এবং ‘বাংলাদেশ কমিউনিটি ইন ফ্রান্স’ (বিসিএফ) এর প্রেসিডেন্ট এমডি নূর।
Discussion about this post