দেশব্যাপী চলছে কোটা বিরোধী আন্দোলন। এই আন্দোলনকে ঘিরে চলছে পক্ষে-বিপক্ষে মতামত। এবার কোটা আন্দোলনকে ঘিরে আলোচনায় এসেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মানজুর আল মতিন পীতম। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশংসায় ভাসছেন তিনি। শতশত ফেসবুক ব্যবহারকারী তার ছবি শেয়ার তাকে ‘রিয়েল হিরো’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
গণহারে শিক্ষার্থীদের তুলে এনে গ্রেপ্তারের নিন্দা জানিয়ে– বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ককে অবিলম্বে মুক্তি দিতে এবং আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি না চালানোর নির্দেশনা চেয়ে রিটকারী সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মানজুর আল মতিন আলোচনায় আসেন।
জানা যায়, অ্যাডভোকেট মানজুর আল মতিন পীতম সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের তালিকাভুক্ত আইনজীবী। তার বাবা বিচারপতি আব্দুল মতিন আপিল বিভাগের বিচারপতি ছিলেন। বর্তমানে অবসর জীবনযাপন করছেন। পীতম ঢাকার রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসএসি ও এইচএসসি পাস করেন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে ভর্তি হন।
শিক্ষাজীবন শেষে তিনির আইনপেশায় মনোনিবেশ করেন। প্রখ্যাত সংবিধান বিশেষজ্ঞ প্রয়াত মাহমুদুল ইসলামের সাহচার্যে তার আইনপেশায় হাতেখড়ি। বর্তমানে প্রখ্যাত দেওয়ানি আইন ও রিট বিশেষজ্ঞ জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাডভোকেট প্রবীর নিয়োগীর জুনিয়র হিসেবে কাজ করছেন। আইনপেশা পরিচালনার পাশাপাশি পীতম বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল টোয়েন্টিফোরে সংবাদ পাঠ করেন ও টকশো উপস্থাপনা করেন। তার স্ত্রী পেশায় চিকিৎসক। তিনি ১২ বছর বয়সী এক সন্তানের জনক।
কোটা আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানো প্রসঙ্গে অ্যাডভোকেট মানজুর আল মতিন পীতম বলেন, আমি আমার সিনিয়র প্রয়াত মাহমুদুল ইসলামের কাছ থেকে শিখেছি যে, আইনজীবী হিসেবে সমাজের, মানুষের ও আইনের প্রতি দায়বদ্ধতা কাকে বলে। ১৭ জুলাই রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের ফারহান আমার চোখের সামনে গুলিতে মারা গেল। ওইদিন আমি আমার স্ত্রী ও আমার বন্ধু রিন্টু আমরা যখন দেখলাম বাচ্চাদের ওপর গুলি হচ্ছে, বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা নিরস্ত্র আবু সাঈদকে এভাবে মেরে ফেলা হলো। তারপর আমার কাছে মনে হয়েছে, কোনো মানুষ সে হোক আওয়ামী লীগের, হোক সে বিএনপির, হোক সে যেকোনো দলের, কোন মানুষ নিরাপদ নয়।
তিনি বলেন, সে কারণে আমার মনে হয়েছে পরের গুলিটা তো আমার বুকে লাগতে পারে। কারণ ফারহান কি আমার সন্তান নয়? আবু সাঈদ কি আমার সন্তান নয়? তারপর থেকে রাস্তায় থাকছি। সংযুক্ত আরব আমিরাতে আমাদের ভাইয়েরা রাস্তায় নেমেছেন। তারা জানেন রাস্তায় নামলে তাদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হবে। এই মানুষগুলো কত কষ্ট করে, সর্বোচ্চ বিক্রি করে বিদেশে যান আমরা জানি। সেই মানুষগুলো যখন রাস্তায় নেমেছেন, তাদের জীবন শেষ হয়ে যাবে, তারপরও তারা প্রতিবাদ করেছেন। আর আমরা যারা আরাম-আয়েশে এতগুলো বছর কাটিয়েছি, তাদের ঘরে বসে থাকার সুযোগ আছে বলে আমি মনে করি না।
টিবি
Discussion about this post