বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের স্মৃতিশক্তি কমতে থাকে। এটাকে স্বাভাবিক চক্র বা নিয়মও বলা চলে । তবে অল্পবয়সেই স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়াটা ভালো লক্ষণ নয়। মাঝে মাঝে এটি স্বাভাবিক জীবনযাপনেও বাধা সৃষ্টি করে। তাই স্মৃতিশক্তি বাড়ানো গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আমাদের নানা অভ্যাসের কারণে এটি কমে যেতে পারে। বিশেষ করে সঠিক খাদ্যাভ্যাস এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। আমরা প্রতিদিনই অনেক ভুলভাল খাবার খেয়ে ফেলি। যেগুলো আসলে শরীরের তেমন কোনো উপকারে আসে না। সেইসঙ্গে অনেক ধরনের ক্ষতিও করে ফেলে। তাই মস্তিষ্কের কার্যকারিতা ও স্মৃতিশক্তি বাড়াতে নিয়মিত নির্দিষ্ট কিছু খাবার খাওয়া উচিত। আমাদের স্মৃতিশক্তি বাড়াতে কাজ করে যেসব খাবার। চলুন জেনে নেওয়া যাক এমন ৮ খাবার সম্পর্কে-
১. চর্বিযুক্ত মাছ
ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ, স্যামন এবং ট্রাউটের মতো মাছ মস্তিষ্কের বিকাশে অবদান রাখে। ওমেগা-৩ ফ্যাট মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উন্নত করে, যার ফলে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়। তাই এ ধরনের মাছ আপনার খাবারের তালিকায় রাখতে পারেন।
২. ব্রকলি
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন কে সমৃদ্ধ ব্রকলি সুস্থ মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়িয়ে তোলে। প্রয়োজনীয় পুষ্টির অনেকগুলো উপাদান পাবেন এই সবজিতে। তাই আপনার খাবারে যোগ করতে পারেন ব্রকলি। পাশাপাশি আপনার শিশুকেও ব্রকলি খেতে দিবেন। তাতে শিশুর স্মৃতিশক্তি উন্নত হবে।
৩. বাদাম
বাদাম খেতে ভালোলাগে নিশ্চয়ই? এই বাদাম কিন্তু আপনার স্মৃতিশক্তি বাড়াতেও কাজ করে। বাদামে থাকে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন ই। নিয়মিত আখরোট, চিনা বাদাম, কাঠ বাদাম খেলে তা আপনার মস্তিষ্কের কার্যকারিতা আরও বাড়িয়ে তুলবে।
৪.কিশমিশ
কিশমিশ একটি ড্রাই বা শুকনো ফল । ক্যালশিয়াম, পটাশিয়াম এবং ফসফরাসে সমৃদ্ধ কিশমিশ বাচ্চাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে সাহায্য করে। কিশমিশ খেলে হাড় ও দাঁত মজবুত হয় এবং বাচ্চাদের শারীরিক বিকাশের গতি বাড়ে। শুধু তাই নয়, কিশমিশ বাচ্চাদের মস্তিষ্কেও পুষ্টি জোগায়। কিশমিশ খাওয়ালে মস্তিষ্ক পূর্ণ পুষ্টি লাভ করে থাকে। বাচ্চাদের মস্তিষ্কের বিকাশ ও তাদের স্মৃতিশক্তি মজবুত করার জন্য তাদের কিশমিশ খাওয়ানো উচিত। ছোট বাচ্চাদের প্রতিদিন কিশমিশ খাওয়ালে স্মৃতি শক্তি মজবুত হয়।
৫. কুমড়ার বীজ
এই ছোট্ট বীজ ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, জিঙ্ক এবং কপারের একটি বড় উৎস, যা মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয়। এগুলো সালাদে ছিটিয়ে দিন বা স্ন্যাকসের জন্য ব্যবহার করুন। কুমড়া বীজ পুষ্টিকর উপাদানে ভরপুর। এটি স্মৃতিশক্তি বাড়াতে কাজ করবে।
৬. ডার্ক চকোলেট
ডার্ক চকোলেট খেলে ফ্ল্যাভোনয়েড, ক্যাফেইন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের কারণে মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায়। সর্বাধিক উপকারিতার জন্য উচ্চতর কোকো সমৃদ্ধ চকোলেট বেছে নিন। তবে একসঙ্গে অনেকখানি চকোলেট খেয়ে ফেলবেন না, ১-২ টুকরাই যথেষ্ট।
৭. ডিম
আমাদের প্রতিদিনের খাবারে ডিম বেশ জনপ্রিয়। এটি কোলিন সমৃদ্ধ। কোলিন হলো এক ধরনের পুষ্টি যা অ্যাসিটাইলকোলিন অগ্রদূত হিসেবে কাজ করে। এটি মেজাজ এবং স্মৃতি নিয়ন্ত্রণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি নিউরোট্রান্সমিটার। প্রতিদিন সকালের খাবারে একটি করে ডিম খেতে পারেন। এতে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পাবে।
৮. কমলা
ভিটামিন সি সমৃদ্ধ কমলা মানসিক অবক্ষয় রোধ করতে এবং সামগ্রিক মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করে। আপনার মস্তিষ্কের ক্ষমতা তীক্ষ্ণ রাখতে খাবারের তালিকায় কমলা যোগ করুন। সাইট্রাস সমৃদ্ধ সতেজ এই ফল আপনার স্মৃতিশক্তি বাড়াতে কাজ করবে।
এস আই/
Discussion about this post