চাহিদার কথা বিবেচনায় রেখে চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে কৃষি ও পল্লি ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ৩৮ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা গত ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৫ হাজার কোটি টাকা। সেই হিসাবে গতবারের তুলনায় এবার ৮.৫৭ শতাংশ বেশি নির্ধারণ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) বিকেলে কৃষি ও পল্লি ঋণ নীতি ঘোষণায় এ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগ সূত্রে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, কৃষির উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে জিডিপির প্রবৃদ্ধি অর্জন এবং মুল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে কৃষি খাতে পর্যাপ্ত ঋণ প্রবাহের গুরুত্ব বিবেচনায় নিয়ে ব্যাংকসমূহের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে ৩৮ হাজার কোটি টাকা কৃষি ও পল্লি ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। এ লক্ষ্যমাত্রা বিগত ২০২৩-২০২৪ অর্থবিছরের লক্ষ্যমাত্রা ৩৫ হাজার কোটি টাকার তুলনায় ৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংকসমূহের জন্য ১২ হাজার ৬১৫ কোটি টাকা। আর বেসরকারি ও বিদেশি বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহের জন্য ২৫ হাজাট ৩৮৫ কোটি টাকা কৃষি ও পল্লি ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধবারণ করা হয়েছে।
চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের কৃষি ও পল্লি ঋণ নীতিমালা ও কর্মসূচিতে নতুন অন্তর্ভুক্ত উল্লেখযোগ্য নির্দেশনায়- কৃষি ও পল্লি ঋণের পরিধি ও আওতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে নতুন শস্য ও ফসলের হিসেবে চাষের ঋণ নিয়মাচার অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ইসলামী শরীয়াহভিত্তিক ব্যাংকসমূহ ইসলামিক ব্যাংকিং পদ্ধতিতে কৃষি উৎপাদন খাতে বিনিয়োগের জন্য ইসলামী শরীয়াহভিত্তিক বিনিয়োগ পদ্ধতি সংযোেজন করা হয়েছে। প্রাণিসম্পদ খাত ১ লাখ টাকা এবং পল্লি ঋণের ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণের ক্ষেত্রে ডিপি নোট (১০ টাকা থেকে ৫০ টাকার স্ট্যাম্প সরকারি নির্দেশনা মােতাবেক) লেটার অব হাইপােথিকেশন (স্যাম্প প্রয়ােজন নেই) লেটার অব গ্যারান্টি ব্যক্তিগত (স্ট্যাম্প প্রয়াজন নেই) ছাড়া আর কোনো চার্জ ডকুমেন্ট গ্রহণ না করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এবারের কৃষি ঋণ অর্থায়নের আয় উৎসারী খাতের মধ্যে শীতলপাটি বুনন খাতের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। গ্রামীণ শুঁটকি উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং মুক্তাচাষে ঋণ বিতরণের নির্দেশনা সংযোেজন করা হয়েছে। কৃষি পণ্য পরিবহণ খাতে দলগতভাবে কৃষি ঋণ বিতরণের নির্দেশনা দেওয়া ভুট্টা (রবি) ও পেয়াজ চাষের জন্য ঋণ বিতরণের সময়সীমা বৃদ্ধি করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরের কৃষি ও পল্লী ঋণের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মতামত অনুযায়ী উপকৃলীয় এ্যাকোয়া-কালচার খাতে ঋণ বিতরণ এবং কাঁকড়া, কুচিয়া, সিবাস বা ভেটকি বা কোরাল ও অন্যান্য অপ্রচলিত মৎস্য চাষে ঋণ বিতরণ সংক্রান্ত অনুচ্ছেদগুলোকে পরিমার্জন করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্টি মন্ত্রণালয়ের মতামত অনুযায়ী খাচায় মাছ চাষে ঋণ বিতরণ এবং ভেনামি চিংড়ি চাষে ঋণ দেওয়া ক্ষেত্রে বিদ্যমান সংশ্লিষ্ট নীতি অনুসারে অনুমতিপ্রাপ্ত ব্যাক্তি প্রতিষ্ঠানকে খাণ দেওয়ার বিষয়টি অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য গ্রাহক পর্যায়ে স্বল্প সুদে (8% হারে) অর্থায়নের নিমিত্ত গঠিত ৫ হাজার কোটি টাকার পুনঃ অথ্থায়ন স্কিমের মেয়াদ বৃদ্ধি, স্কিমটির আওতায় যাতে অধিক সংখ্যক প্রকৃত/প্রান্তিক কৃষক সুবিধা পায় সে লক্ষ্যে প্রাণিসম্পদ খাতে ঋণের উদ্ধসীমা নির্ধারণ এবং ঋণের আওতা/খাত বৃদ্ধি সংক্রান্ত প্রদত্ত নির্দেশনা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
এ ইউ/
Discussion about this post