ভারী বর্ষণ আর ভারত থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে গত ২৩ আগস্ট ফুলেফেঁপে ওঠে গোমতী নদীর পানি। এই নদীর পারে কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার বুড়বুড়িয়া এলাকা। আশপাশের গ্রামগুলোকে রক্ষা করতে নদীর পারে একটি সড়ক বাঁধ আছে। ২৩ আগস্ট রাতে পানির তোড়ে সেই বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয় উপজেলার কয়েক শ গ্রাম। কোনোমতে জীবন নিয়ে যে যার মতো করে আশ্রয় নেয় নিরাপদ স্থানে। এসব গ্রামবাসীর চোখেমুখে এখনো সেই ভয়াল রাতের ছাপ লেগে আছে।
গোমতীর বাঁধ ভাঙনের রাতে এই বাঁধের নিরাপদ অংশে আশ্রয় নেয় স্থানীয় সহস্রাধিক পরিবার। অনেকে ফিরে গেলেও এখনো শতাধিক পরিবার বাঁধে আছে।
আজ শনিবার সকালে সরেজমিনে বুড়বুড়িয়া গোমতীর বাঁধে দেখা যায়, কিং বাজেহরা থেকে বুড়বুড়িয়া পর্যন্ত সড়ক বাঁধের ওপর শতাধিক পরিবার ৯ দিন ধরে বসবাস করছেন। ত্রিপল টানিয়ে তাঁর নিচেই চলে ঘুম-খাওয়া। কেউ কেউ পাশে গরু–ছাগল বেঁধে রেখেছেন। বাঁধের ওপর দু-একজন নারীকে মাটির চুলা বানিয়ে রান্না করতে দেখা যায়। ছোট ছেলেমেয়েরা সেখানে খেলাধুলা করছিল।নদীর বাঁধ যেখানটায় ভেঙেছে, সেখানে শতাধিক মানুষ। ঘুরে ঘুরে তাঁরা ভাঙা জায়গাটা দেখছেন। বাঁধের অন্তত ৫০০ ফুট অংশ ভেঙেছে এখানে। এখনো পানি প্রবেশ করছে লোকালয়ে। অনেকে এসেছেন নৌকা নিয়ে জায়গাটি ঘুরে দেখতে। কেউ কেউ সেখানে মাছ ধরছিলেন।
বুড়বুড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা আবদুল হালিমের পরিবার বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে। তাঁর এক ছেলে ও এক মেয়ে। তিনি পেশায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চালক। সে রাতের কথা মনে করে আঁতকে ওঠেন আবদুল হালিম। তিনি বলেন, যখন গোমতীর পানি বেড়েছিল, তখন থেকে ভয়ে অটোরিকশা চালানো বন্ধ করে গোমতীর পাড়ে অবস্থান নেন। বৃহস্পতিবার রাতে যখন গোমতীর পানি বাঁধ ছুঁই ছুঁই করে, সেদিন তিনি পরিবারসহ এই বাঁধে অবস্থান নেন।
এস এম/
Discussion about this post