টাঙ্গাইলে যমুনা নদীর ওপর নির্মাণাধীন দেশের দীর্ঘতম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলসেতুর ৯৪ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। বাকি ৬ শতাংশ কাজ শেষ হলেই ডিসেম্বরে উদ্বোধন করা হবে রেলসেতুটি। চালু হওয়ার পর রেলসেতু দিয়ে বিরতিহীনভাবে কমপক্ষে ৮৮টি ট্রেন দ্রুতগতিতে সেতু পারাপার হতে পারবে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নির্মাণাধীন এই সেতুর সবকটি স্প্যান বসানো হয়েছে। সেতুটির টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর অংশের কাজ পুরোপুরি সম্পন্ন হয়েছে এবং সিরাজগঞ্জের পশ্চিম প্রান্তেও পুরোপুরি কাজ শেষের দিকে। এছাড়া সেতুপূর্ব ও পশ্চিম স্টেশন আধুনিকায়নের কাজও শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
রেলওয়ে প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলসেতু নির্মাণে প্রথমে ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে এর মেয়াদ দুই বছর বাড়ানো হয়। এতে প্রকল্পের ব্যয়ও বৃদ্ধি করা হয়। পরে ব্যয় বেড়ে ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৫ লাখ ৬৩ হাজার টাকা দাঁড়ায়। এর মধ্যে দেশীয় অর্থায়ন ২৭.৬০ শতাংশ। জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) ঋণ দিয়েছে ১২ হাজার ১৪৯ কোটি টাকা। যা প্রকল্পের ৭২.৪০ শতাংশ।
সেতুর ৫০টি পিলারের ওপর বসানো হয়েছে ভিয়েতনাম ও মিয়ানমার থেকে আনা ৪৯টি মরিচারোধী স্টিলের স্প্যান। চলতি বছরের জুন মাসে পুরোপুরি দৃশ্যমান হয়েছে ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার সেতুর সুপার স্ট্রাকচার। লুপ লাইন, দুপাশের অ্যাপ্রোচ লেন, স্টেশন স্থাপনসহ সব কাজই শেষ হয়ে গেছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলসেতু প্রকল্প পরিচালক (পিডি) আল ফাত্তাহ মো. মাসুদুর রহমান বলেন, প্রায় ৯৪ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। বাকিগুলোর মধ্যে সেতুর পশ্চিমপাড়ের স্টেশন ও প্ল্যাটফর্মের কিছু কাজ রয়েছে, সেগুলো কাজ চলমান রয়েছে। এছাড়া সেতুর ওপরে পশ্চিমপাড়ের অংশে কিছু লেভেলিং অ্যালাইমিং ও ট্র্যাক বসানোর কাজ রয়েছে। কাজগুলো শেষে টেস্টিং করার পর কমিশনিংসহ ট্রেন চালুর কিছু নিয়ম শেষ করে ডিসেম্বরের দিকে সেতু উদ্বোধন করার সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৮ সালে বঙ্গবন্ধু সেতু চালু হওয়ার পরই ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগ স্থাপিত হয়। তবে ২০০৮ সালে সেতুটিতে ফাটল দেখা দেওয়ায় কমিয়ে দেওয়া হয় ট্রেনের গতিসীমা। বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় ৩৮টি ট্রেন ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার গতিতে সেতু পারাপার হওয়ায় সময়ের অপচয়ের পাশাপাশি ঘটছে শিডিউল বিপর্যয়। বাড়ছে যাত্রী ভোগান্তি। এসব সমস্যা সমাধানে সরকার যমুনা নদীর ওপর আলাদা রেলসেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়।
এ ইউ/
Discussion about this post