ঘুমাতে অনেকেই পছন্দ করেন। কিন্তু এমন যদি হয় এই ঘুমের জন্য কেউ পুরষ্কার পাচ্ছেন; তাহলে তো কথাই নেই। এমনটিই হয়েছে বেঙ্গালুরুর ব্যাংকার সাঈশ্বরী পাতিলের বেলায়। ওয়েকফিটের স্লিপ ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রামের তৃতীয় সিজনে ‘স্লিপ চ্যাম্পিয়ন’ খেতাব অর্জন করেছেন এই নারী। ব্যাঙ্গালোর স্টার্ট-আপ উদ্যোগের এই প্রতিযোগিতায় ৯ লাখ রুপি জিতেছেন তিনি।

পাতিল এই প্রোগ্রামের জন্য বেছে নেয়া ১২ জন ‘স্লিপ ইন্টার্ন’-এর মধ্যে অন্যতম ছিলেন। যারা ঘুমের মূল্য দেয় কিন্তু এটিকে অগ্রাধিকার দিতে চায় না; তাদের প্রতি রাতে ৮ থেকে ৯ ঘণ্টা ঘুমানোর জন্য উৎসাহিত করা হয় এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে। এছাড়া ইন্টার্নদের দিনের বেলায়ও ২০ মিনিটের ‘পাওয়ার ন্যাপ’ নেয়ার জন্য পরামর্শ দেয়া হতো।
এই প্রতিযোগিতায় প্রত্যেক অংশগ্রহণকারীকে তাদের ঘুমের গুণমান নিরীক্ষণ এবং উন্নত করার জন্য একটি গদি এবং একটি যোগাযোগহীন ঘুম ট্র্যাকার দেয়া হয়েছিল। দ্য হিন্দু রিপোর্ট করেছে, ইন্টার্নরা তাদের ঘুমের অভ্যাস বাড়াতে এবং লোভনীয় ‘স্লিপ চ্যাম্পিয়ন’ খেতাব জেতার সম্ভাবনা বাড়াতে ঘুম বিশেষজ্ঞদের নেতৃত্বে কর্মশালায় অংশ নিয়েছিলেন।
ওয়েকফিট জানিয়েছে তিন সিজনে প্রোগ্রামটির জন্য ১ মিলিয়নেরও বেশি আবেদন পড়েছে এবং ৫১ জন ইন্টার্নকে নিযুক্ত করা হয়েছে। এতে মোট ৬৩ লাখ রুপি বৃত্তি দেয়া হয়েছে।
ওয়েকফিটের গ্রেট ইন্ডিয়ান স্লিপ স্কোরকার্ডের ২০২৪ সালের সংস্করণে দেখা গেছে, প্রায় ৫০ শতাংশ ভারতীয় ক্লান্ত বোধ করে জেগে ওঠেন। এর পেছনে কমন কারণ হলো দীর্ঘ কাজের সময়, ঘুমের খারাপ পরিবেশ, চাপ, না হাঁটা এবং শারীরিক পরিশ্রমের অভাব। ওয়েকফিটের চিফ মার্কেটিং অফিসার কুণাল দুবে দ্য হিন্দুকে বলেন, আমাদের স্লিপ ইন্টার্নশিপ হলো ভারতীয়দের ঘুমের সাথে পুনরায় সংযোগ করার একটি মজার উপায়। এর অনুপ্রেরণা হিসেবে আমরা একটি উপবৃত্তি দিয়ে থাকি।
পাতিল জিতেছেন; কারণ তিনি ঘুমের মধ্যে শৃঙ্খলার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছিলেন। তিনি মিডিয়া আউটলেটকে বলেছেন, একটি ভাল স্কোর বজায় রাখার জন্য আপনাকে আপনার ঘুম এবং জেগে ওঠার সময়গুলো সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে। যার অর্থ হলো, গভীর রাতের কার্যকলাপগুলো কমিয়ে দেয়া; যেমন মুভি দেখা বা সোশ্যাল মিডিয়া স্ক্রল করা। এই অভ্যাসগুলো ভাঙা কঠিন, তবে মূল্যবান।
অভিজ্ঞতার আলোকে তিনি ব্যাখ্যা করেছিলেন, কীভাবে কোভিড তার রুটিনকে এলোমেলো করেছিল। তার ভাষ্য, ‘এই ইন্টার্নশিপ আমাকে শিখিয়েছে কিভাবে সুশৃঙ্খলভাবে ঘুমাতে হয়। তবে প্রতিযোগিতার চিন্তা ঘুমকে প্রভাবিত করে। আমার ঘুমের স্কোর উন্নত করার বিষয়টি নিয়ে শুরুতে চাপ ছিল। আপনি কীভাবে ভাল ঘুমের জন্য প্রস্তুত হন? ফাইনাল প্রতিযোগিতার দিন আমি কেবল শান্ত ছিলাম।’
আবেদন করার কারণ কী ছিলো তা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, আমি একজন ভাল স্লিপার। আমি যে কোনও জায়গায় ঘুমাতে পারি; এমনকি একটি বাইকের ওপরও। এক বন্ধু এবং আমি মজা করার জন্য আবেদন করেছিলাম; কারণ আইডিয়াটা অদ্ভুত মনে হয়েছিল।’
সূত্রঃ সময় টিভি
এ ইউ/
Discussion about this post