চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার পাইকপাড়া ইউনিয়নের পূর্ব ভাওয়াল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চলছে একজন শিক্ষক দিয়ে। বিদ্যালয়ের ৪ জন শিক্ষকের মধ্যে দুজনের অবসরগ্রহণ এবং একজনের মৃত্যুতে তৈরি হয়েছে এমন পরিস্থিতি।১৯৪০ সালে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়টিতে বর্তমানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১০৮ জন। দুই শিফটে ৬ শ্রেণির নিয়মিত ১০০ থেকে ১০৫ জন শিক্ষার্থীর উপস্থিতি থাকলেও বিদ্যালয়টিতে শিক্ষক রয়েছেন একজন। ফলে ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান ব্যবস্থা।
বিদ্যালয় গিয়ে দেখা যায়, প্রতিটি শ্রেণিতে শিক্ষার্থীদের সরব উপস্থিতি রয়েছে। বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে পাওয়া গেল ফাতেমা আক্তার নামের একজন সহকারী শিক্ষক। তিনি এখন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে আছেন। কিছুক্ষণ পর দেখা হয় আব্দুর রহমান নামে আরও একজনের সঙ্গে। তাকে ওই বিদ্যালয়ে অস্থায়ীভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শিক্ষক সংকটে থাকা এই বিদ্যালয়টিতে ৭ জন শিক্ষক থাকার কথা থাকলেও ৪ জন দিয়ে চলছিল পাঠদান। প্রধান শিক্ষক শান্তি রানী ধর অবসরে গেলে ৩ শিক্ষক মিলে বিদ্যালয়ের পাঠদান চালাতেন। এই তিনজনের মধ্যে নুরুন্নাহার নামে একজন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তবে তিনিও গত ৩ মাস আগে তিনি মারা যান। দুজন সহকারি শিক্ষক মিলে বিদ্যালয়টির হাল ধরলেও তানিয়া আক্তার নামের একজন শিক্ষিকা শারীরিক অসুস্থতার কারণে অবসরে চলে যান। ফলে বিদ্যালয়টিতে শিক্ষকের সংখ্যা দাঁড়ায় একজন।
দায়িত্বে থাকা সহকারী শিক্ষক ফাতেমা আক্তার জানান, শিক্ষক না থাকায় সকালে প্রাকপ্রাথমিক, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের একসঙ্গে ক্লাস শুরু করা হয়। পরিস্থিতি বিবেচনায় একজন অস্থায়ী শিক্ষককে আনা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে অস্থায়ী শিক্ষকের সহযোগিতায় সবকটি শ্রেণিকক্ষে পাঠদান করাতে হয় তাদের। একইভাবে দ্বিতীয় পালায়ও সব শিক্ষার্থীকে ক্লাসে বসিয়ে শ্রেণি কার্যক্রম শুরু করেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, অভিভাবকের সহায়তায় শিক্ষার্থীরা নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসলেও বিদ্যালয়টিতে শিক্ষক না থাকায় শিশুদের প্রাথমিক শিক্ষা নিয়ে হতাশা দেখা দিয়েছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের গুরুত্বের সঙ্গে নজর দেওয়া জরুরি।
বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে গেলে ফরিদগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আফতাবুল ইসলামকে কার্যালয়ে পাওয়া যায়নি।উপজেলার সহকারি প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাহাবুব আলম বলেন, ‘বিদ্যালয়টির মাত্র একজন শিক্ষক রয়েছে সত্য। তবে এমন পরিস্থিতিতে একজন অস্থায়ী শিক্ষককে আনা হয়েছে। বিদ্যালয়টিতে শিক্ষক দিতে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করা হবে।’
এই বিষয়ে ফরিদগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মৌলি মন্ডলের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, বিদ্যালয়টির শিক্ষক সংকটের বিষয়টি জানা ছিল না। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে ওই বিদ্যালয়ে শিক্ষক দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।
এস এম/
Discussion about this post