টানা বৃষ্টি ও ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে সৃষ্ট শেরপুর জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি তিন দিনেও উন্নতি হয়নি। শনিবার রাত থেকে উজানের পানি কিছুটা কমতে শুরু করলেও ভাটি এলাকায় অন্তত ১০টি গ্রাম নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। এপর্যন্ত ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়ী উপজেলার অন্তত ১৭টি ইউনিয়নের ১২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এর সাথে যুক্ত হয়েছে নকলা, শ্রীবরদী ও সদর উপজেলার বেশ কিছু গ্রাম। সব মিলিয়ে এখন পানিবন্দি হয়ে পড়েছে কমপক্ষে লক্ষাধিক মানুষ।
রোববার (৬ অক্টোবর) সারাদিন টানা বৃষ্টি হয়েছে। গত দুইদিন ধরে অনেক এলাকায় রাস্তায় অবস্থান করছে মানুষ। তাদের পাশেই রাখা হয়েছে গৃহপালিত গরু, ছাগল, ভেড়াসহ হাঁস-মুরগি। সবজি ক্ষেতসহ মাঠ ডুবে যাওয়ায় ঘাসের অভাব দেখা দিয়েছে। এছাড়া বাড়িঘরে পানি উঠে যাওয়ায় নষ্ট হয়ে গেছে খড়ের গাদা। একদিকে খাদ্য সংকট, অন্যদিকে মাথার উপরে চাল না থাকায় বৃষ্টিতে ভিজে পশুরা নানা অসুখে আক্রান্ত হচ্ছে।
ইতিমধ্যে নালিতাবাড়ী ঝিনাইগাতী ও নকলা উপজেলায় বন্যার পানিতে মোট ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত দুই দিনে টানা উদ্ধার অভিযান করেছে সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, বিজিবিসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। তবে উদ্ধার সামগ্রী ও নৌকার অভাবে অনেক পরিবারের সদস্যদের রোববার উদ্ধার করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসনের তথ্য মতে ১২৩টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। তবে সেই কেন্দ্রগুলোতে সহায়তা না পৌঁছায় দুর্ভোগে রয়েছে আশ্রয়কেন্দ্রের বাসিন্দারা। বেশ কিছু আশ্রয়কেন্দ্র স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও স্বেচ্ছাসেবীদের সহযোগিতায় চললেও সরকারি সহায়তা না পৌঁছার অভিযোগ করছে তারা। আশ্রয়কেন্দ্রের বাসিন্দারা সরকারের কাছে জরুরি ত্রাণ সুবিধাসহ পুনর্বাসনের দাবি করেছেন।
শেরপুর জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান বলেন, ইতোমধ্যে ৫ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার পৌঁছানো হয়েছে। পুলিশ, সেনাবাহিনীসহ অন্যান্য সংস্থা কাজ করছে। যে কোন পরিস্থিতির জন্য আমরা প্রস্তুত আছি।
এ ব্যাপারে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. এবিএম আব্দুর রউফ বলেন, জেলার দুইটি উপজেলায় বন্যা হওয়ার অনেক প্রাণী খাদ্য সংকটে পড়েছে এবং নানা রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে। আমরা নিয়মিত কৃষকদের সাথে যোগাযোগ করছি এবং সমাধান দেওয়ার চেষ্টা করছি।
সূত্র:রাইজিংবিডি
এস/এইচ
Discussion about this post