বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ার প্রধান কারণ হলো প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স। বর্তমানে রিজার্ভের পরিমাণ বিপিএম-৬ হিসাব অনুযায়ী ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে, যা দীর্ঘদিন পর সবচেয়ে বেশি। তবে, নিট ইন্টারন্যাশনাল রিজার্ভ (এনআইআর), অর্থাৎ ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ এখনও প্রায় ১৫ বিলিয়ন ডলার। ২০২১ সালের আগস্টে বাংলাদেশের রিজার্ভ সর্বোচ্চ ছিল ৪৮ বিলিয়ন ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্যমতে, চলতি বছরের নভেম্বরের ৬ তারিখে গ্রস রিজার্ভ ছিল ২৫.৭৩ বিলিয়ন ডলার, এবং বিপিএম-৬ অনুযায়ী ২০ বিলিয়ন ডলার। গত অক্টোবরের শুরুতে গ্রস রিজার্ভ ছিল ২৪.৭৪ বিলিয়ন ডলার এবং বিপিএম-৬ ছিল ১৯.৭৬ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ৬ নভেম্বর শেষে ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ ছিল ১৫০০ কোটি ডলার, যা দেশের তিন মাসের আমদানি ব্যয়ের জন্য যথেষ্ট নয়। সাধারণত, একটি দেশের রিজার্ভে ন্যূনতম তিন মাসের আমদানি ব্যয়ের সমান পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা থাকা উচিত।
এদিকে, বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতি দুই মাস অন্তর এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) আমদানি দায় পরিশোধ করে, যা রিজার্ভ কিছুটা কমিয়ে দেয়। তবে প্রবাসীদের রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়ে যাওয়ায় রিজার্ভের পরিমাণ বাড়ছে, যা দেশের অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে প্রবাসীরা ১৯০ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন, যা ছিল গত ১০ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। তবে পরবর্তীতে, সরকার গঠনের পর বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানোর ক্যাম্পেইন শুরু হলে, রেমিট্যান্স প্রবাহ আবার বৃদ্ধি পায়। আগস্টে প্রবাসী আয় বেড়ে দাঁড়ায় ২২২ কোটি ডলার (২.২২ বিলিয়ন ডলার)। সেপ্টেম্বর মাসে, এটি আরো বাড়ে এবং ২৪০ কোটি ৪৮ লাখ (২.৪০ বিলিয়ন) ডলার হয়ে যায়, যা গত চার বছরে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পরিমাণ। ২০২৪ সালের জুনে সর্বোচ্চ ছিল ২৫৪ কোটি ডলার, এবং ২০২০ সালের জুলাইয়ে ২৫৯ কোটি ৮২ লাখ ডলার প্রবাসী আয় এসেছিল।
অক্টোবরে আবারও ২৪০ কোটি ডলার রেমিট্যান্স দেশে পাঠানো হয়, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ২৮ হাজার ৭৪০ কোটি টাকার সমান (প্রতি ডলার ১২০ টাকা ধরে)। অক্টোবরে প্রতিদিন গড়ে ৭ কোটি ৭৩ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে।
আর এম/
Discussion about this post