বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরও গভীর করতে এবং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ। এসময় তিনি বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং আগামী বছরের শুরুতে বিনিয়োগের সম্ভাব্য যাচাইয়ে একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল পাঠানোর কথা বলেন। বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস দ্বিপক্ষীয় বৈঠককালে তিনি এই আগ্রহ ব্যক্ত করেন। এ সময় প্রধান উপদেষ্টা আজারবাইজানের বাকুর তেল কোম্পানিতে বাংলাদেশিদের চাকরির সুযোগ বাড়ানোর আহ্বান জানান।
আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট জানান, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরও গভীর করার ক্ষেত্রগুলো খুঁজে বের করতে তার সরকারের একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল আগামী বছরের প্রথম দিকে বাংলাদেশ সফর করবে। তার সরকার বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী এবং ব্যবসা-বাণিজ্য ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে উভয় দেশের জন্য বাড়তি সম্ভাবনা দেখতে পাওয়ায় ঢাকায় একটি আবাসিক দূতাবাস খোলার সম্ভাবনা নিয়ে কাজ করছে।
প্রেসিডেন্ট আলিয়েভ জুলাই-আগস্ট মাসের ছাত্র নেতৃত্বাধীন বিপ্লবের প্রশংসা করে বলেন, তিনি কয়েক মাস ধরে বাংলাদেশের ঘটনাবলি পর্যবেক্ষণ করছেন। অধ্যাপক ইউনূসের চিন্তাধারায় অনুপ্রাণিত হয়ে আজারবাইজানে একটি যুব স্বনির্ভর কর্মসূচি চালু করা হয়েছে। তিনি ড. ইউনূসকে অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্ব গ্রহণের জন্য অভিনন্দন জানান এবং তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নতি ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন। প্রেসিডেন্ট আলিয়েভ বলেন, আজারবাইজান ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করেছে। তিনি বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের ডিজিটালাইজেশনের অভিজ্ঞতা বিনিময়ের আগ্রহ প্রকাশ করেন।
বৈঠকে ড. মুহাম্মদ ইউনূস দুদেশের মধ্যে আরও দৃঢ় সম্পর্কের আহ্বান জানিয়ে বলেন, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য, জনগণের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক এবং প্রধান প্রধান আন্তর্জাতিক ফোরামে সহযোগিতা বৃদ্ধি পেলে উভয় দেশ সমৃদ্ধ হবে। তেলসমৃদ্ধ মধ্য এশিয়ার দেশগুলোয় আরও বেশি বাংলাদেশির কর্মসংস্থানের সুযোগ থাকা উচিত। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় দেশের জাহাজ-নির্মাণ শিল্পে শত শত বাংলাদেশি কাজের সুযোগ পেয়েছেন।
এদিকে ড. মুহাম্মদ ইউনূস আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে কপ২৯ বৈশি^ক জলবায়ু সম্মেলনের ফাঁকে সাইডলাইনে সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে’র সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অগ্রগতি নিয়ে আলোচনাকালে ড. ইউনূস ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, শ্রম ইস্যুটি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারের অন্যতম এবং তারা সব শ্রম সমস্যার সমাধান করতে চান। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে বাংলাদেশের সঙ্গে শ্রম ইস্যুতে কাজ করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এছাড়া তিনি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে মানব পাচার ও অভিবাসন ইস্যু নিয়েও আলোচনা করেন।
এন পি/
Discussion about this post