কুড়িগ্রামে সিঙ্গাপুর থেকে আসা প্রবাসী স্বামীকে ব্লেড দিয়ে গলা কেটে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় স্ত্রী সোমা আক্তারকে গ্রেপ্তার করছে পুলিশ। ঘটনার পর পালিয়ে গেলেও শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় পুলিশ। ভূরুঙ্গামারী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুনিরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে একই দিন সন্ধ্যায় কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার সদর ইউনিয়নের বাগভান্ডার গ্রামে চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা ঘটে। গ্রেপ্তার সোমা ভূরুঙ্গামারী উপজেলার পাথরডুবী ইউনিয়নের তালুক মশালডাঙা গ্রামের উমর আলীর মেয়ে।
অন্যদিকে ব্লেড দিয়ে গলা কেটে হত্যাচেষ্টায় আহত মইনুদ্দিন উপজেলার ভোটহাট গ্রামের নুর ইসলামের ছেলে। দীর্ঘদিন ধরে সিঙ্গাপুর প্রবাসী মইনুদ্দিন চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে দেশে ফেরেন। বর্তমানে মুমূর্ষু অবস্থায় তিনি রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
জানা গেছে, পরকীয়ায় আসক্ত স্ত্রীকে বোঝাতে সম্প্রতি সিঙ্গাপুর থেকে দেশে আসেন মইনুদ্দিন। পরে বিষয়টি নিয়ে ঝগড়া ও হাতাহাতির একপর্যায়ে স্বামী মইনুদ্দিনকে ব্লেড দিয়ে গলা কেটে হত্যার চেষ্টা করেন স্ত্রী সোমা। এ ঘটনায় ভূরুঙ্গামারী থানায় মামলা করেছেন আহত মইনুদ্দিনের মা মনোয়ারা বেগম।
এলাকাবাসী জানায়, প্রায় ৪ বছর আগে মইনুদ্দিন ও সোমার বিয়ে হয়। এর এক বছরের মাথায় উন্নত জীবনের আশায় স্ত্রীকে রেখে সিঙ্গাপুরে পাড়ি জমান মইনুদ্দিন। এদিকে স্বামীর অনুপস্থিতিতে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন সোমা। পরে বিষয়টি পরিবারের সামনে এলে স্বজনরা তাকে নানাভাবে বোঝানোর চেষ্টা করেন। তবে এরপরও সোমা পরকীয়া থেকে না ফিরলে বিষয়টি মইনুদ্দিনকে জানানো হয়। পরবর্তীতে স্ত্রীকে বোঝাতে গত ৪ ডিসেম্বর দেশে ফেরেন মইনুদ্দিন। তবে দেশে আসার পর থেকে বিষয়টি নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া চলছিল।
স্বজনরা জানান, শনিবার সন্ধ্যায় স্ত্রীসহ মইনুদ্দিন সোমার বড় বোনের বাড়ি বাগভান্ডার গ্রামে বেড়াতে যান। সেখানে গিয়েও পরকীয়ার বিষয়টি নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। এর একপর্যায়ে তাদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে। পরবর্তীতে নতুন ব্লেড দিয়ে স্বামীর গলা কেটে পালিয়ে যান সোমা। সবশেষ শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাকে ওই এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এদিকে ঘটনার পর পরিবারের লোকজন মুমূর্ষু অবস্থায় মইনুদ্দিনকে উদ্ধার করে ভূরুঙ্গামারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। তবে অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে সেখান থেকে তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। বর্তমানে সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন মইনুদ্দিন।
ভূরুঙ্গামারী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুনিরুল ইসলাম জানান, খবর পাওয়ার পরপরই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। অন্যদিকে শনিবার রাতে অভিযুক্ত সোমাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় আহত মইনুদ্দিনের মা মনোয়ারা বেগম বাদী হয়ে পুত্রবধূ সোমার বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলা করেছেন। আসামিকে আদালতে পাঠানো হবে।
এ ইউ/
Discussion about this post