কিশোরগঞ্জের ভৈরবে নিখোঁজের ৯ ঘণ্টা পর প্রতিবেশীর ঘরের আলমারির ভিতর থেকে ৩ বছর বয়সী সাহেল নামে এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
আজ মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) রাত দেড়টায় পৌর শহরের পঞ্চবটী এলাকায় দ্বীন মোহাম্মদ মিয়ার বাড়ির ভাড়াটিয়ার ঘর থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে থানা পুলিশ। এ ঘটনায় বাড়ির কেয়ার টেকার হাসান মিয়াকে আটক করা হয়েছে। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ থানা এলাকার মৃত এরশাদ আলির ছেলে।
শিশু সাহাল আহম্মেদ (৩ বছর) উপজেলার কালিকাপ্রসাদ ইউনিয়নের আদর্শ পাড়া গ্রামের কাতার প্রবাসী সানাউল্লাহ আহমেদ ও মোমেনা বেগম দম্পতির ছেলে। তারা পৌর শহরের পঞ্চবটি দ্বীন মোহাম্মদ মিয়ার বাড়ির ভাড়াটিয়া।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ৩০ ডিসেম্বর বিকাল ৫টায় পৌর শহরের পঞ্চবটি ভাড়া বাসা থেকে নিখোঁজ হয় সাহাল আহম্মেদ। পরে পরিবারের সদস্যরা খোঁজাখুজি করে ও পৌর শহরে মাইক দিয়ে নিখোঁজ সংবাদ প্রচার করে। ওই দিন রাত ১১ টায় থানা পুলিশের কাছে লিখিত হারানো অভিযোগ করেন পরিবারটি। থানা পুলিশ তৎক্ষণাৎ পঞ্চবটি এলাকায় ঘটনাস্থলে গিয়ে সার্বিক বিষয়টি তদারকি করে রাত দেড়টায় শিশুরটির মরদেহ কেয়ারটেকার হাসানের ঘরের আলমারির ভিতর থেকে উদ্ধার করে।
স্থানীয় আরো জানান, মোমেনার সাথে হাসানের সম্পর্ক কারো চোখে পড়েনি। তবে হাসানের সাথে মোমেনার পরিবারের দ্বন্দ্ব রয়েছে। বিভিন্ন সময় হাসান ও মোমেনার পরিবারের বাকবিতণ্ডা হতো। প্রায় সময় হাসান মোমেনাকে দেখে নেয়ার হুমকি ধামকি দিতো।
এ বিষয়ে নিহত শিশুর মা মোমেনা বলেন, আমার একটি প্রতিবন্ধী ছেলে ছিলে সে বাবা ডাকতে পারতো না। তারপর আমি আমার স্বামীর খুশির জন্য আরেকটি বাচ্চার জন্ম দেই। আমার ছেলে সাহাল এখন তিন বছরের। সে তার বাবাকে বাবা বলে ডাকে। আমার প্রতিবন্ধী ছেলে দুই বছর আগেই মারা যায়। আজ হাসান আমার একমাত্র সম্বল আমার শিশু ছেলেটিকে মেরে ফেলেছে। আমি হাসানের ফাঁসি চাই। আমি আমার স্বামীকে ভালোবাসি আমার সাথে হাসানের কোন সম্পর্ক ছিল না।
এ বিষয়ের হাজতে থাকা হাসান বলেন, দুই বছর যাবত মোমেনার সাথে তার সম্পর্ক রয়েছে। তবে কীভাবে বা কেন শিশুটিকে সে হত্যা করেছে এ বিষয়ে কিছুই বলতে রাজি হয়নি ৷
ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহিন মিয়া বলেন, শিশুটি নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। কিছু আলামতের ভিত্তিতে পার্শ্ববর্তী ভাড়াটিয়ার ঘরের তালা ভেঙে তল্লাশি চালিয়ে তার বাসার আলমারিতে শিশুটির মরদেহ পাই। ধারণা করা হচ্ছে শিশুর মা মোমেনা বেগমের সঙ্গে ভাড়াটিয়া হাছান মিয়ার পরকীয়া সম্পর্ক রয়েছে। এর জেরে শিশুটিকে জিম্মি করে শ্বাসরোধ করে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটতে পারে। তবে তদন্ত শেষে মূল কারণ জানা যাবে।
এ ইউ/
Discussion about this post