ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মুঠোফোনের বার্তায় প্রবাসী স্বামী তালাক দেওয়ায় মারিয়া খানম প্রভা (১৮) নামে এক গৃহবধূ বিষ ট্যাবলেট খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। রোববার (১৯ জানুয়ারি) সকালে নিহতের মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হয়েছে।
নিহত মারিয়া সদর উপজেলার বাসুদেব ইউনিয়নের চান্দি গ্রামের আইয়ুব মিয়ার মেয়ে।
হাসপাতাল ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ২ বছর আগে উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের টাংগা গ্রামের মুসা মিয়ার ছেলে আরিয়ান চৌধুরী ও মারিয়া খানম প্রেমের সম্পর্কের পর বিয়ে করেন। বিয়ের কয়েকমাস পর আরিয়ান সৌদি আরবে চলে যান। এরপর থেকে আরিয়ান ও তার পরিবারের লোকজন বিভিন্ন রকম সন্দেহ করে এবং যৌতুকের জন্য মারিয়াকে মানসিক নির্যাতন করে আসছিল। কয়েকদিন ধরে মারিয়া তার বাবার বাড়িতে অবস্থান করছিল। শনিবার দুপুরে মোবাইলে স্বামীর সঙ্গে কথা বলার সময় দুজনের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে স্বামী আরিয়ান মুঠোফোনের মেসেজে মারিয়াকে তালাক দেয়। এই অভিমানে মারিয়া বিষ ট্যাবলেট খান। পরে পরিবারের লোকজন তাকে অচেতন অবস্থায় জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে তার মরদেহ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
নিহত মারিয়ার পিতা আইয়ুব মিয়া অভিযোগ করে বলেন, মারিয়া ৯ম শ্রেণীতে লেখাপড়া করার সময় আরিয়ানের সঙ্গে মারিয়ার প্রেমের সম্পর্ক হয়। পরে তারা ২০২২ সালের দিকে পালিয়ে বিয়ে করে। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই আরিয়ান বদলে যায়। মারিয়াকে সে প্রায় সময় মানসিক নির্যাতন করতো। বিয়ের পর সে সৌদি আরবে চলে যাবার পর থেকে মারিয়াকে সন্দেহ করতো এবং আরিয়ানের পরিবারের লোকজন মারিয়াকে যৌতুকের জন্য নির্যাতন করে আসছিল। শনিবার আরিয়ান মুঠোফোনের বার্তায় মারিয়াকে তালাক দেয়। এই খবর শুনে আমার মেয়ে বিষের ট্যাবলেট খেয়ে ফেলে। পরে তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তারা আমার মেয়েকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করেছে। আমি এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।
সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মোজাফ্ফর হোসেন জানান, নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে গৃহবধূর আত্মহত্যার বিষয়টি জানানো হয়েছে। মরদেহের ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন ও অভিযোগ সাপেক্ষে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ ইউ/
Discussion about this post