পৃথিবীর দিকে দ্রুতগতিতে ধেয়ে আসছে ‘২০২৪ ওয়াইআর ৪’ নামের একটি গ্রহাণু। ২০৩২ সালের মধ্যে এই গ্রহাণু আছড়ে পড়তে পারে পৃথিবীতে। আর এতে করে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে ভারত, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানসহ বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশ। সম্প্রতি এমন তথ্যই দিয়েছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিবিএসনিউজ বলছে, এরকম হওয়ার আশঙ্কা ২ দশমিক ৩ শতাংশ বলে জানিয়েছে নাসা। গবেষণা সংস্থাটির বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই গ্রহাণু পৃথিবীর পাশ দিয়ে নিরাপদে বেরিয়ে যেতে পারে। তবে যদি এই গ্রহাণু আছড়ে পড়ে, তা ঘটতে পারে ২০৩২ সালের ২২ ডিসেম্বর নাগাদ।
পথ, গতি ও আকার অনুযায়ী গ্রহাণুটি কোথায় কোথায় আছড়ে পড়তে পারে তা অনুমান করেছেন বিজ্ঞানীরা। নাসার ক্যাটালিনা স্কাই সার্ভে প্রকল্পের বিজ্ঞানী ডেভিড র্যাঙ্কিন জানিয়েছেন, গ্রহাণুটির জন্য একটি রিস্ক করিডর তৈরি করা হয়েছে, যেখানে পৃথিবীর বড় একটি অংশ রয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস বলছে, এই রিস্ক করিডরে রয়েছে দক্ষিণ আমেরিকা, দক্ষিণ এশিয়া, আফ্রিকা, ভেনেজুয়েলা, কলম্বিয়া, ইকুয়েডর, ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, সুদান, নাইজেরিয়া ইত্যাদি অঞ্চলগুলো। দিন যত যাচ্ছে, এটি পৃথিবীতে আঘাত হানার আশঙ্কা তত বাড়ছে।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এই গ্রহাণুর কক্ষপথ জেনে এটুকু বোঝা যায় যে, এটি পৃথিবীতে আছড়ে পড়তে পারে। কিন্তু এর প্রভাব কত বিধ্বংসী হবে, তা বলা যায় না। প্রথম দিকে এটিকে ছোট মনে হলেও এখন সেই সময়ের চেয়ে এর দ্বিগুণ আকার নজরে এসেছে বিজ্ঞানীদের। এই গ্রহাণুতে ৫০০টি পরমাণু বোমার চেয়ে বেশি জ্বালানি জমাট বাঁধা অবস্থায় রয়েছে।
বিজ্ঞানী অ্যান্ড্রিউজ জানিয়েছিলেন, গ্রহাণুটিকে টুকরো টুকরো করে দিলেও তা খুবই অনিরাপদ হবে। একটি বিরাট কামানের গোলাকে এভাবে সামান্য গুলিতে পরিণত করা যায় না। মহাকাশযান নিয়ে তার দিকে হানা দিলেও তা অনেক বেশি ঝুঁকিপূর্ণ কাজ হবে।
সংবাদমাধ্যম এনবিসিনিউজ বলছে, গত বছরের ডিসেম্বরে চিলির এক গবেষণা স্টেশন থেকে প্রথম এই গ্রহাণু শনাক্ত করা হয়। এর পর থেকেই টেলিস্কোপ থেকে এই বড় গ্রহাণু নিয়ে চলছে গবেষণা। এটি প্রতি ঘণ্টায় ৩৮ হাজার মাইল গতিতে আসতে পারে। নাসা এখন থেকে নিয়মিত এই গ্রহাণুকে নজরে রাখছে। পৃথিবীতে আঘাত না হানলে এটি চাঁদে আঘাত হানতে পারে।
এ নিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিবিএসনিউজের সঙ্গে বিশেষ সাক্ষাৎকার দিয়েছেন ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির প্ল্যানেটারি ডিফেন্স অফিসের প্রধান রিচার্ড ময়সল। তিনি জানান, প্রতি চার বছর পরপর এই গ্রহাণু আমাদের পদক্ষিণ করছে।
এখন এর পথ নিয়ে হবে গবেষণা। এরপর কী করা যায়, তা নিয়ে বিস্তর আলোচনা করবেন তারা। আগামী এপ্রিলে এ ব্যাপারে নতুন কোনো আপডেট আসতে পারে।
এর আগে ১৯০৮ সালে একই আকারের গ্রহাণু ‘দ্য টুংসুকা’ আছড়ে পড়েছিল সাইবেরিয়ায়। ৮৩০ বর্গকিলোমিটার জঙ্গল পুরো ভস্ম হয়ে গিয়েছিল।
এস এইচ/
Discussion about this post