চট্টগ্রাম নগরের বাকলিয়া থেকে অপহৃত এক বছর তিন মাস বয়সী শিশু রাব্বিকে এক সপ্তাহ পর ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত অপহরণ চক্রের মূল হোতা মো. দুলাল মিয়াকে (৪৮) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। র্যাব জানিয়েছে, এই পেশাদার চোর “ক্রেতার পছন্দ মত” শিশু চুরি করতেন।
বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন র্যাব-৭-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মাহবুব আলম। নগরের বহদ্দারহাট র্যাব-৭-এর মিডিয়া সেন্টারে এ প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়।
র্যাবের ভাষ্য, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি মো. দুলাল মিয়া চট্টগ্রাম থেকে শিশুটিকে চুরি করে মোরশেদের কাছে বিক্রি করেন। ওই দিন ভোরে শিশুটিকে সড়াইল থেকে উদ্ধার করে র্যাব। সেখান থেকে আনা হয় চট্টগ্রামে।
র্যাব জানিয়েছে, গ্রেপ্তার মোরশেদ একজন সৌদি প্রবাসী। তিনি ১৭ বছর সৌদি আরবে ছিলেন। তার পাঁচ কন্যা সন্তান রয়েছে, তবে কোনো ছেলে সন্তান নেই। এজন্য তিনি দুলাল মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। দুলাল শিশুটিকে চুরি করে তার কাছে বিক্রি করেন।
র্যাব-৭ এর চান্দগাঁও ক্যাম্পে সংবাদ সম্মেলনে বাহিনীর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহবুব আলম বলেন, “দুলাল পেশাদার শিশু চোর। সম্প্রতি ভৈরবেও একটি শিশু চুরির ঘটনায় তার নাম এসেছে। দুলালের স্ত্রী ওই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন। উদ্ধার করা শিশুটিকে চট্টগ্রাম থেকে চুরি করে দুলাল সরাইলে নিয়ে প্রবাসী মোরশেদের এক লাখ টাকায় বিক্রি করেছিলেন।”
র্যাব অধিনায়ক বলেন, “বুধবার বিকেলে দুলালকে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ভোর রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে মোরশেদকে গ্রেপ্তার করা হয়।”
তার ভাষ্য, “শিশু চুরির বিষয়ে দুলালের মোবাইল থেকে বেশকিছু তথ্য পাওয়া গেছে। তিনি হাসপাতাল, রেল স্টেশনের মতো এলাকায় ঘোরাঘুরি করে নিশানা ঠিক করেন। যাদের শিশুর প্রয়োজন হয়, তাদের কাছে মেসেঞ্জিং অ্যাপ ‘ইমোর’ মাধ্যমে শিশুর ছবি পাঠানো হলে। পছন্দ হলে ওই শিশুকে ‘চুরি বা অপহরণ’ করে বিক্রি করতেন দুলাল।”
চট্টগ্রামে শিশুটির চুরির বর্ণনা দিতে গিয়ে এই কর্মকর্তা বলেন, “গত ১৭ ফেব্রুয়ারি ফাতেমা আক্তার নামে এক নারী নেত্রকোনা যাওয়ার জন্য তার পাঁচ বছর বয়সী কন্যা ও এক বছর তিন মাস বয়সী পুত্র সন্তানকে নিয়ে চট্টগ্রাম রেল স্টেশনে যান। সেখানে তার সঙ্গে দুলালের পরিচয় হয়। দুই দিন চট্টগ্রাম থেকে নেত্রকোনার কোনো ট্রেন চলাচল করবে না বলে ওই নারীকে স্টেশন থেকে থেকে বের করে আনেন দুলাল। এরপর বাকলিয়া এলাকার একটি বাসায় নিয়ে যান। ১৯ ফেব্রুয়ারি সকালে ফাতেমা বাথরুমে গেলে তার পুত্র সন্তানটি নিয়ে পালিয়ে যায়।”
র্যাব কর্মকর্তা মাহবুব বলেন, “বিষয়টি র্যাবকে জানানোর পর ওই এলাকার আশেপাশের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে চুরির বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে গোয়েন্দা নজরদারি শুরু করেন তারা। ২৪ ফেব্রুয়ারি ফাতেমার স্বামী বাকলিয়া থানায় একটি মামলা করেন।”
এম এইচ/
Discussion about this post