একজন স্কুলছাত্র থেকে দেশের অন্যতম জনপ্রিয় রক ব্যান্ডের শক্তিশালী বেজিস্ট হয়ে ওঠার গল্প—ওয়াহিদ উজ জামান তূর্য-র সংগীতযাত্রা হলো একাগ্রতা, প্রতিশ্রুতি এবং প্রতিভার এক অনন্য উদাহরণ।
তূর্যর সংগীতের প্রতি ভালোবাসা জন্মেছিল নবম শ্রেণিতে থাকতেই, যখন তিনি প্রথম গিটার হাতে তুলে নেন। মনিপুর হাই স্কুল থেকে এসএসসি সম্পন্ন করার পর, নিজের স্কুল বন্ধুদের নিয়ে তিনি একটি ব্যান্ড গঠন করেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নিজের দক্ষতা বৃদ্ধি করতে থাকেন এবং বিভিন্ন ব্যান্ডের সাথে বাজিয়ে সংগীতজগতে অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। তবে তার সংগীত জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয় ২০১৩ সালে, যখন তিনি অ্যাশেজ ব্যান্ডের রেকর্ডিং সেশনে যোগ দেন। সেই সহযোগিতা এক নতুন যাত্রার সূচনা করে, যা আজ ১২ বছর পেরিয়ে এক অবিচ্ছেদ্য সম্পর্কে পরিণত হয়েছে।
তূর্যর গভীর বেজলাইন আশেজকে বাংলাদেশের রক মিউজিকের অগ্রদূত হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সাহায্য করেছে। তাদের প্রথম অ্যালবাম “ছারপোকা” এবং দ্বিতীয় অ্যালবাম অন্তঃসারশূন্য, ব্যান্ডটি ধারাবাহিকভাবে সৃষ্টিশীলতার সীমানা অতিক্রম করে চলেছে। অ্যাশেজ -এর ৪৮টিরও বেশি জেলায় পারফরম্যান্স এবং ভারত, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস ও ফ্রান্স-সহ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কনসার্ট তাদের ব্যাপক জনপ্রিয়তার সাক্ষ্য বহন করে। এক মিলিয়নের বেশি সাবস্ক্রাইবার সমৃদ্ধ ইউটিউব চ্যানেল এবং ২০২২ সালে সেরা ব্যান্ড পুরস্কার অর্জন তাদের অবস্থানকে আরও দৃঢ় করেছে।
শুধু ব্যান্ড পারফরম্যান্সেই নয়, তূর্য নতুন প্রজন্মের বেজ গিটারিস্টদের অনুপ্রাণিত করতেও প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি তার জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা শেয়ার করছেন, বেজ শেখানোর মাধ্যমে আগ্রহীদের সাহায্য করছেন। অ্যাশেজ-এর আসন্ন তৃতীয় অ্যালবাম “বিভ্রম”-এও তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন, যা ব্যান্ডটির নতুন অধ্যায়ের পথপ্রদর্শক হবে।তূর্য এখন তার ফেসবুক পেজ এবং ইউটিউব চ্যানেলে মনোযোগ দিচ্ছেন, যেখানে তিনি তার লাইভ পারফরম্যান্স শেয়ার করেন।
স্কুলের ছোট্ট জ্যাম সেশন থেকে আন্তর্জাতিক কনসার্টের স্টেজ দাপিয়ে বেড়ানোর গল্প, ওয়াহিদ উজ জামান তূর্য প্রমাণ করে দিয়েছেন—সংগীতের প্রতি নিষ্ঠা ও ভালোবাসা থাকলে স্বপ্ন বাস্তবে পরিণত হয়। তবে তার যাত্রা এখানেই শেষ নয়—বরং আরও জোরালো হয়ে উঠছে!
এম এইচ/
Discussion about this post