ঠাকুরগাঁওয়ের ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল থেকে চুরি হওয়ার ২দিন পর শিশু সায়ানকে উদ্ধার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। শিশুটিকে উদ্ধারের পাশাপাশি এ ঘটনায় ৪ জনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে।
এদিকে ২দিন পর শিশু সায়ানকে ফিরে পেয়ে আবেগাপ্লুত তার পরিবারের স্বজনেরা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তারা।
ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসি শহিদুর রহমান বলেন, গতকাল বুধবার দুপুর পৌনে ২টার দিকে ঢাকার গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মুলাইদ গ্রাম থেকে চুরি হওয়া শিশু সায়ানকে ঠাকুরগাঁও থেকে উদ্ধার করেন র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-১ গাজীপুর ও র্যাব-১৩ দিনাজপুরের সদস্যরা। এ সময় এই চুরির ঘটনায় সম্পৃক্ত ৪ জনকে গ্রেপ্তারও করেছেন তারা।
আটককৃতরা হলেন গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার নুলতলা গ্রামের সোনালী আক্তার শিরিন (২০), তার স্বামী একই গ্রামের মো. রাজু কবিরাজ (২২), নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার চকপাড়া গ্রামের মো. লিটন মিয়া (৩৫) ও তার স্ত্রী লাভলী বেগম (৩২)। এদিকে গতকাল বুধবার রাত ১১টার দিকে গাজীপুর থেকে উদ্ধারকৃত শিশু সায়ানকে ঠাকুরগাঁও সদর থানায় নিয়ে আসে জেলা পুলিশ। এরপর ওই শিশুটির পরিবারের সদস্যদের ফুল দিয়ে বরণ করার পাশাপাশি স্বজনদের কাছে শিশুটিকে বুঝিয়ে দেন জেলা পুলিশ সুপার শেখ জাহিদুল ইসলাম। এ সময় জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে শিশুটিকে উপহার সামগ্রী প্রদান করা হয় পুলিশের পক্ষ থেকে।
শিশুটির বাবা শিমুল ইসলাম বলেন, ‘পুলিশ ও র্যাবকে ধন্যবাদ জানানোর পাশাপাশি অনুরোধ করে বলছি, আসামীরা যাতে কোনোভাবেই ছাড়া না পায়। আমি তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি চাই।’
শিশুটির মা হাসি বেগম বলেন, ‘পুলিশ, র্যাব, সেনাবাহিনী কেউ আমার বাচ্চার জন্য ঘুমাতে পারেনি। তারা অক্লান্ত পরিশ্রম করে আমার বাচ্চাটিকে উদ্ধার করেছে। তারা এভাবেই যেন নিরলসভাবে কাজ করে মানুষের নিরাপত্তা দিতে পারে তারা। অপহরণকারীরা আমাদের হুমকি দিয়েছে যে, তারা নাকি অল্প সময়ের মধ্যেই জেল থেকে ছাড়া পেয়ে যাবেন। আমি আমার বাচ্চার নিরাপত্তা চাই এবং সেই সঙ্গে পাশাপাশি অপরাধীদের শাস্তি চাই।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁওয়ের পুলিশ সুপার শেখ জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা জানেত পারি, বাচ্চাটি চুরি করে গাজীপুরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তৎক্ষনাৎ আমরা গাজীপুরের মেট্রোপলিটন পুলিশ ও র্যাবকে অবহিত করি। পাশাপাশি পুলিশ হেডকোয়ার্টারের প্রযুক্তিগত সহযোগিতার মাধ্যমে গাজীপুর র্যাব কর্তৃক চুরি হওয়া শিশু সায়ানকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়। এ ঘটনার সঙ্গে আরও কেউ জড়িত থাকলে তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা হবে।’
উল্লেখ্য, গত রবিবার দুপুরে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যার কারণে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার মুন্সিরহাট এলাকার বাসিন্দা শিমুল ইসলাম ও হাসি বেগম দম্পতির ‘দুই মাস বয়সী সন্তান সায়ন’কে ঠাকুরগাঁওয়ের ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। এর পরদিন সোমবার সন্ধ্যায় হাসপাতাল থেকে শিশুটি চুরি হয়। তরিৎ গতিতে হাসপাতাল থেকে শিশু চুরির সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পুলিশ। ফুটেজে দেখা যায়, অজ্ঞাত কালো বোরখা পড়া পরিহিত এক মহিলা বাচ্চাটি চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে।
এরপর এ ঘটনায় ওইদিনই ঠাকুরগাঁও সদর থানায় শিশুটির বাবা শিমুল ইসলাম অপহরণের মামলা করেন। অভিযানে নামে পুলিশ বাহিনী। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় র্যাবের মাধ্যমে গাজীপুর থেকে চুরি হওয়া শিশু সায়ানকে উদ্ধার করা হয়।
এস এইচ/
Discussion about this post