নাসার মহাকাশচারী সুনিতা উইলিয়ামস এবং বুচ উইলমোর প্রায় ৯ মাস মহাকাশে কাটিয়ে এই সপ্তাহে পৃথিবীতে ফিরেছেন। তাদের আট দিনের আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (আইএসএস) মিশন ২৭৮ দিন বাড়লেও অতিরিক্ত কোনো বেতন তারা পাচ্ছেন না। তবে এই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ব্যতিক্রমী মন্তব্য করেন।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, ‘এই ব্যাপারটা আমার কাছে কেউ আনেনি। যদি প্রয়োজন হয়, আমি নিজেই নিজের পকেট থেকে টাকা দেব’। খবর: এনডিটিভি
নাসার মহাকাশচারীরা ফেডারেল কর্মচারী হিসেবে কাজ করেন, তাই তাদের বেতন অন্যান্য সরকারি কর্মচারীদের মতোই নির্ধারিত থাকে। সাধারণত, তারা ওভারটাইম, সাপ্তাহিক ছুটি বা ছুটির দিনে কাজের জন্য অতিরিক্ত অর্থ পান না। মহাকাশে যাওয়াও তাদের সরকারি দায়িত্বের অংশ হিসেবে গণ্য হয়।
নাসা তাদের যাতায়াত, থাকার খরচ এবং খাবারসহ সমস্ত প্রয়োজনীয়তা সরবরাহ করে। এছাড়া, ছোটখাটো ব্যক্তিগত খরচের জন্য দৈনিক ৫ ডলার করে ‘ইনসিডেন্টালস’ দেওয়া হয়। সুনিতা উইলিয়ামস এবং বুচ উইলমোর মহাকাশে মোট ২৮৬ দিন কাটিয়েছেন, যার জন্য তারা প্রত্যেকে ১,৪৩০ ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১,২২,৯৮০ টাকা) পাবেন।
এ বিষয়ে জানার পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ‘শুধু এতটুকুই? তারা যা সহ্য করেছে, তার জন্য এটা যথেষ্ট নয়’।
ওভাল অফিসে এক সংবাদ সম্মেলনে ডোনাল্ড ট্রাম্প স্পেসএক্সের সিইও এলন মাস্ককে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘এলন না থাকলে তারা আরও অনেকদিন মহাকাশে আটকে থাকতে পারতেন। ৯-১০ মাস মহাকাশে থাকলে শরীরের অবস্থা খারাপ হতে শুরু করে। ইলন মাস্ক এখন কঠিন সময় পার করছেন, কিন্তু তার অবদান অসামান্য’।
গত বুধবার স্পেসএক্সের ড্রাগন ক্যাপসুলে চড়ে সুনিতা উইলিয়ামস ও বুচ উইলমোর ফ্লোরিডার পূর্ব উপকূলে অবতরণ করেন। ক্যাপসুল থেকে স্ট্রেচারে করে তাদের বের করা হয়, যা দীর্ঘ মহাকাশযাত্রার পরে স্বাভাবিক বিষয়।
মহাকাশচারীদের ফিরে আসার দৃশ্য সারা বিশ্বে সরাসরি সম্প্রচারিত হয়। পরিবার এবং শুভাকাঙ্ক্ষীরা তাদের ফিরে আসাকে আনন্দের সঙ্গে উদযাপন করেন।
পৃথিবীতে ফিরে এলেও সুনিতা উইলিয়ামস ও বুচ উইলমোরের স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে কিছুটা সময় লাগবে। তাদের এখন মাসব্যাপী পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে, যাতে পেশিশক্তি এবং হাড়ের ঘনত্ব পুনরুদ্ধার করা যায়। এর মধ্যে থাকবে বিশেষ শারীরিক ব্যায়াম ও চলাফেরার প্রশিক্ষণ।
মহাকাশে ৯ মাস কাটিয়ে ফিরে আসা এই দুই মহাকাশচারী শুধু তাদের পরিবার নয়, সারা বিশ্বের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে উঠেছেন।
এ ইউ/
Discussion about this post