ভারত ও পাকিস্তানের প্রধান সীমান্ত চেকপোস্টে ঘটলো মা ও সন্তানের বিচ্ছেদ। আত্তারি-ওয়াঘা সীমান্ত ক্রসিংটির একদিকে ভারতের আত্তারি গ্রাম, অন্যদিকে পাকিস্তানের ওয়াঘা। এই সীমান্ত পথ ছিলো ভারত ও পাকিস্তানের নাগরিকদের জন্য একটি গেটওয়ে। তবে ভারত ও পাকিস্তানের চলমান উত্তেজনার মধ্যে নানাভাবে মাসুল দিচ্ছে দুই দেশের নাগরিকগণ।
গত মঙ্গলবারে ভারত সরকার প্রায় সব পাকিস্তানি নাগরিককে দেশ ছাড়ার নির্দেশ দেওয়ার পর সারা রাত ভ্রমণ করে নয়াদিল্লি থেকে সীমান্ত ক্রসিংয়ে পৌঁছান সায়রা ও ফারহান। সাথে ছিলো ৯ মাসের ছেলে আজলান।
গত ২২ এপ্রিল ভারতশাসিত কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীর হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওই নির্দেশ দেওয়া হয়। নরেন্দ্র মোদি সরকার এ ঘটনায় পাকিস্তানকে দায়ী করলেও ইসলামাবাদ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
এদিকে সীমান্তে দাঁড়িয়ে ফারহান তার স্ত্রী সায়রাকে বলেন, ‘শিগগিরই আমাদের দেখা হবে।’ এরপর শিশুপুত্র আজলানের গালে চুমু খেয়ে বিদায় জানালেন ফারহান। আর বলেন, ‘ইনশা আল্লাহ, খুব শিগগির দেখা হবে। আমি তোমাদের দুজনের জন্য দোয়া করব।’
জানা গেছে তিন বছর আগে সায়রার সঙ্গে নয়াদিল্লির ফারহানের বিয়ে হয়। এরপর থেকেই সায়রা নয়াদিল্লিতে থাকেন। গত মঙ্গলবার আত্তারি সীমান্তে দাঁড়িয়ে বিদায়ের সময়, সায়রা ও ফারহান দুজনেরই চোখ ভিজে উঠেছিল। হঠাৎ এক সীমান্তরক্ষী তাড়া দিয়ে বললেন—‘চলুন, সময় নেই।’ ঠিক এখানেই কাঁটাতার আর ব্যারিকেডে ঘেরা চেকপয়েন্টে এ দম্পতির পরিচয়ের একমাত্র চিহ্ন হয়ে উঠল, পাসপোর্টের রং—সায়রার সবুজ, ফারহানের নীল। এক নিরাপত্তারক্ষী এগিয়ে এসে আজলানের পাসপোর্টের দিকে ইশারা করলেন। সেটি ছিল নীল রঙের, মানে ভারতীয়।
হঠাৎ নিরাপত্তারক্ষী সায়রাকে বললেন, ‘বাচ্চাটি যাবে না, ম্যাডাম।’ সায়রা তখনো বাঁ হাতে ছেলেকে জড়িয়ে ধরে আছেন। এরপর কিছু বুঝে ওঠার আগেই ওই দম্পতিকে আলাদা হয়ে গেল। সায়রা চললেন করাচির পথে, আর ফারহান দুধের সন্তান আজলানকে নিয়ে ফিরে গেলেন নয়াদিল্লিতে।
সূত্রঃ আল জাজিরা
এম এইচ/
Discussion about this post