ইসরায়েলকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দিতে সৌদি আরবকে আব্রাহাম অ্যাকর্ডসে যোগ দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আব্রাহাম চুক্তিতে সৌদির যোগদান করা তার “স্বপ্ন” বলেও মন্তব্য করেন ট্রাম্প। বুধবার (১৪ মে) এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে টাইমস অব ইসরায়েল।
মঙ্গলবার রিয়াদে অনুষ্ঠিত সৌদি–মার্কিন বিনিয়োগ ফোরামে ভাষণ দেয়ার সময় ট্রাম্প সরাসরি সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের প্রতি এ আহ্বান জানান। ট্রাম্প বলেন, ‘আমার দৃঢ় আশা, ইচ্ছা এমনকি আমার স্বপ্নও যে সৌদি আরব শীঘ্রই আব্রাহাম চুক্তিতে যোগ দেবে।’ যদিও রিয়াদ তার নিজস্ব সময়ে তা করবে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন তিনি।
এ ছাড়া গাজা সংঘাতের বিষয়ে ট্রাম্প বলেছেন, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব যুদ্ধ শেষ করার জন্য কাজ করছেন তিনি। কাজ করছেন সকল বন্দীকে ফিরিয়ে দেয়ার জন্যও।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানান, গাজায় চলমান যুদ্ধ এবং ভবিষ্যতের ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পথ তৈরিতে ইসরায়েলি সরকারের অস্বীকৃতির কারণে রিয়াদ বর্তমানে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার জন্য প্রস্তুত নয় বলে মনে হচ্ছে।
এর আগে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন রিয়াদের সঙ্গে স্বাক্ষরিত একটি “মেগা-চুক্তি”-তে ইসরায়েলের সঙ্গে সৌদির সম্পর্ক তৈরিতে স্বাভাবিকীকরণ চুক্তি অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করেছিল। এই ধরনের চুক্তির জন্য প্রয়োজন হতো সিনেটের দুই-তৃতীয়াংশের অনুমোদনের। তবে বাইডেন প্রশাসন আশা করেছিল, ইসরায়েল-সৌদি স্বাভাবিকীকরণ চুক্তিতে স্বাক্ষর করলে উভয় পক্ষের সমর্থন পাওয়া সম্ভব হবে।
বাইডেন প্রশাসন সৌদি আরবের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক চুক্তির ধারাবাহিকতায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিল এবং রিয়াদের সাথে গুরুতর আলোচনা শুরু করার কথাও ছিল। কিন্তু এর মধ্যেই ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে আক্রমণ করে বসে হামাস।
ওই আক্রমণ এবং পরবর্তী যুদ্ধ দু’দেশের সম্পর্কের স্বাভাবিকীকরণ প্রচেষ্টাকে ব্যাহত করে এবং রিয়াদ বুঝতে শুরু করে যে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য আরও দৃঢ় পদক্ষেপের প্রয়োজন হবে।
বাইডেনের মেয়াদের শেষ পর্যন্ত যুদ্ধ অব্যাহত থাকায়, সৌদি কর্মকর্তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ছোট দ্বিপাক্ষিক চুক্তি নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করতে থাকে। তবে বাইডেন ক্ষমতা ছাড়ার সময় পর্যন্ত সমাধানের তেমন পথ আসেনি। পরে ট্রাম্প প্রশাসন ক্ষমতায় এসে সেগুলো এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছে।
ইসরায়েল-সৌদি সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ চুক্তিতে মধ্যস্থতা করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন ট্রাম্প। কিন্তু মঙ্গলবারের তার মন্তব্য ইঙ্গিত দেয় যে তিনি যত তাড়াতাড়ি আশা করেছিলেন তত তাড়াতাড়ি সৌদি এই চুক্তিতে যোগ দেবে না।
আব্রাহাম অ্যাকর্ড হলো ইসরায়েল এবং আরব রাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার জন্য চুক্তির একটি সিরিজ, যা ২০২০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হয়। প্রথম মেয়াদে ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত আব্রাহাম অ্যাকর্ডসের মাধ্যমে সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, সুদান ও মরক্কো ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করে।
এম এইচ/
Discussion about this post