প্রতিদিনের একটি বড় অংশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যয় করে থাকে কিশোর-কিশোরীরা। এ জন্য অনেক নেতিবাচক প্রভাব পড়ে তাদের জীবনে। তবে ছেলেদের তুলনায় দ্বিগুণ হারে নেতিবাচক প্রভাবের মুখোমুখি হচ্ছে মেয়েরা।
সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের ওয়েলসের স্কুলশিক্ষার্থীদের ওপর করা একটি গবেষণা থেকে এই তথ্য উঠে এসেছে। গবেষণাটি পরিচালনা করেছে যুক্তরাজ্যের পাবলিক হেলথ ওয়েলস (PHW) ও কার্ডিফ ইউনিভার্সিটি।
যেখানে ১৩ থেকে ১৫ বছর বয়সী প্রতি পাঁচজন মেয়ের মধ্যে একজন জানিয়েছেন, অতিরিক্ত সময় ব্যয়, পরিবারের সঙ্গে দ্বন্দ্ব বা মনোযোগের ঘাটতির মতো সমস্যায় ভুগছেন তারা। আর একই বয়সী ছেলেদের ক্ষেত্রে এ হার মাত্র প্রতি ১০ জনে একজন।
গবেষণায় দেখা গেছে, নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মধ্যে মেয়েরাই সবচেয়ে বেশি সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। দশম শ্রেণির ১৪-১৫ বছর বয়সী ২১ শতাংশ মেয়ে এবং নবম শ্রেণির ১৩-১৪ বছর বয়সী ২০.৫ শতাংশ মেয়ে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে নেতিবাচক অভিজ্ঞতা হয়েছে বলে জানায়। ছেলেদের ক্ষেত্রে একই বয়সে এ হার যথাক্রমে ১০.১ এবং ৯.৮ শতাংশ।
১৩ বছর বয়সী লয়েস জানায়, কখনো কখনো শুধু সময় কাটানোর জন্য ফোন হাতে নিই। কিন্তু বুঝতেই পারি না কখন দুই ঘণ্টা পেরিয়ে যায়! এটা মাঝেমধ্যে ভয় পাইয়ে দেয়।
এ ছাড়াও গবেষণায় অংশ নেওয়া অনেকে জানিয়েছে, খেলাধুলা বা শখের কাজ বাদ দিয়ে তারা সোশ্যাল মিডিয়ায় সময় দিচ্ছে। পিএইচডব্লিও-এর স্বাস্থ্য উন্নয়ন পরামর্শক এমিলি ভ্যান দে ভেনটার জানান, মেয়েরা ছেলেদের তুলনায় বেশি সময় রাতেও ডিভাইস ব্যবহার করে এবং বেশি রিপোর্ট করে যে তারা সাইবার বুলিয়িংয়ের শিকার হয়েছে।
এমিলির ভাষ্য, সোশ্যাল মিডিয়ার কিছু সুবিধা থাকলেও টিনএজারদের মানসিক স্বাস্থ্যর ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব স্পষ্ট। বিষণ্নতা, উদ্বেগ ও আত্মমূল্যায়নের ঘাটতির পেছনে এটি একটি বড় ভূমিকা রাখছে।
পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, রাতে ডিভাইসের নোটিফিকেশন বন্ধ রাখা, ঘুমানোর ঘরে ফোন না রাখা এবং ঘুমের আগে সামাজিক মাধ্যমে প্রবেশ না করার অভ্যাস তৈরি করলে সমস্যা কিছুটা কমে আসতে পারে।
জরিপটিতে সপ্তম থেকে একাদশ শ্রেণির প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার শিক্ষার্থী অংশ নেয়। পরিসংখ্যান আর অভিজ্ঞতা একসঙ্গে বলছে, সোশ্যাল মিডিয়ার আলোর নিচে অন্ধকারে ডুবে যাচ্ছে এক বড় অংশের কিশোরী। এখন সময় এসেছে প্রযুক্তি ব্যবহারে ভারসাম্য শেখানোর, পরিবার ও সমাজের পক্ষ থেকে সচেতনতা তৈরির।
এস এইচ/
Discussion about this post