মডেলিং-অভিনেত্রী ছেড়ে দেওয়া নাজনীন আক্তার হ্যাপী ওরফে আমাতুল্লাহ তার স্বামী মুফতি মোহাম্মদ তালহার বিরুদ্ধে মারধর ও যৌতুক দাবির অভিযোগে মামলা করেছেন। বুধবার (১৪ মে) বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট জান্নাতুল ফেরদৌস এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সোমবার (১২ মে) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ এহসানুল ইসলামের আদালতে বাদী হয়ে নারী নির্যাতন দমন আইনে এ মামলা করেন তিনি। আদালত মামলার এজাহার গ্রহণ করে রূপনগর থানার ওসিকে মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ২০১৮ সালের ১৯ জুলাই পাঁচ লাখ টাকা মোহরানায় নাজনীন আক্তার হ্যাপীর সঙ্গে আসামি মুফতি মোহাম্মদ তালহার বিয়ে হয়। বিয়ের সময় মোহরানার টাকা অপরিশোধিত থাকে। এসময় হ্যাপীর মা তার স্বামীকে সংসারের আসবাবপত্র কেনার জন্য পাঁচ লাখ টাকা উপহার দেন। এরপর তাদের ঘরে ২০২১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি একটি পুত্রসন্তান জন্ম নেয়। সন্তান জন্মের পর কিছুদিন পর্যন্ত স্বামী তালহা হ্যাপীর ভরণপোষণ দিতেন। তবে পরবর্তী সময়ে তালহা স্ত্রীকে ভরণপোষণ দেওয়া বন্ধ করেন এবং সাংসারিক ছোটখাট বিষয়ে স্ত্রী হ্যাপীকে মারধর করেন।
এজাহারে বাদী আরও অভিযোগ করেন, চলতি বছরের ৪ মে ভুক্তভোগী বাদী হ্যাপী জানতে পারেন যে, তার স্বামী তালহা গোপনে অন্যত্র বিয়ে করেছেন। বিয়ের বিষয়ে স্বামীর কাছে জানতে চাইলে তিনি হ্যাপীকে মারধর করেন। পরবর্তীতে গত ১০ মে হ্যাপীর ভাড়া বাসায় এসে তার স্বামী তালহা নিজ রেস্টুরেন্ট ব্যবসায় বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য ২০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। এসময় হ্যাপী যৌতুক দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে বেধড়ক মারধর করেন আসামি মুফতি তালহা। একই সঙ্গে যৌতুকের অর্থ না দিলে হ্যাপীকে তালাক দেওয়ার হুমকিও দেন তালহা।
মামলার বিষয়ে বাদী নাজনীন আক্তার হ্যাপী বলেন, হাফেজ মাওলানা মুফতি মোহাম্মদ তালহা নামটা শুনলেই একটা সম্মান চলে আসে। সে এই লেবাসটাকে কাজে লাগিয়ে অনেক অপকর্ম করে আসছে। আমি এতদিন মারপিটের ভয়ে কিছু বলিনি। কিন্তু এখন এসব বলতে বাধ্য হচ্ছি, কারণ আজ দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। এ অবস্থা থেকে উদ্ধারের জন্য আমার আইনজীবীর মাধ্যমে আইনি পদক্ষেপ নিয়েছি।
মামলার বিষয়ে বাদীপক্ষের আইনজীবী জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, হ্যাপীর স্বামী মুফতি তালহা ৮-৯ টা বিয়ে করেছে। বিভিন্ন সময়ে হ্যাপীকে মারধর করে যৌতুক চায়। হ্যাপী তার থেকে তালাক চাইলেও তিনি তালাক দিচ্ছেন না। এজন্য আমরা আইনি পদক্ষেপ নিয়েছি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মুফতি মোহাম্মদ তালহার বক্তব্য নেওয়ার চেষ্টা করলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, তিনি দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। এজন্য তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
২০১৪ সালের জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটারের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা দায়ের করে আলোচনায় আসেন মডেল ও অভিনেত্রী নাজনীন আক্তার হ্যাপী। পরবর্তীতে অভিনয় ছেড়ে পর্দার আড়ালে চলে যান তিনি। ইসলামি শিক্ষায় দীক্ষিত হয়ে নিজের নাম পরিবর্তন করে রাখেন আমাতুল্লাহ। বিয়ে করেন মুফতি মোহাম্মদ তালহা নামক একজন মাদরাসা শিক্ষককে।
এস এইচ/
Discussion about this post