জামালপুরে চিরকুট লিখে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে মেহেদী হাসান আপন নামের এক এসএসসি পরীক্ষার্থী।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) রাত ৯টার দিকে জামালপুরের সরিষাবাড়ি উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের বয়ড়া এলাকায় নিজ ঘরে আড়ার সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে আপন। সে বয়ড়া ইসরাইল আহমেদ উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী। মৃত্যুর আগে দুই পৃষ্ঠার একটি চিরকুট লিখে গেছে সে।
চিরকুটে সে লিখেছে, শুরুতেই বলি আব্বা সালাম নিবেন। আমি আপনাদের অনেক কষ্ট দিয়েছি, আমি আপনাদের অনেক ক্ষতি করেছি, আপনাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছি। আমি ছোট থেকেই অনেক খারাপ, নিজেকে কখনও ভালো করতে পারি নাই। বাবার কথা রাখতে পারি নাই, বাবার মনে অনেক কষ্ট দিয়েছি। বাবা আপনার পা দুটি ধরে মাফ চাইতে পারলাম না। আপনি আমাকে মাফ করে দিয়েন। আর মা তুমি আমার জন্য অনেক কষ্ট করছো, আমাকে অনেক বুঝাতে কিন্তু ভালো হতে পারলাম না। আর দাদার কথা কি বলব, সে তো আমার জন্য নিজের সম্মানটুকুও হারিয়েছে।
সে লেখে, আমার জন্য অনেক কিছু করেছে। কিন্তু আমি কেন ভালো হতে পারলাম না। আচ্ছা আমি সবার মনে কষ্ট দিয়েছি আপনারা আমাকে মাফ করে দিয়েন। বন্ধু তোদের সঙ্গে কত আড্ডা দিতাম, কত মজা করতাম, তোরা আমার কথায় কিছু মনে করিস না। আমার কবরে মাটি দিতে আসিস। আমার কাছে কেউ টাকা পেয়ে থাকলে আমাকে মাফ করে দিয়েন। আমি ভালো হতে পারলাম না। তাই নিজেই দুনিয়া থেকে চলে গেলাম। আপনারা ভালো থাকেন। আপনাদের খারাপ সন্তান আর নেই। বন্ধু তোরা কিন্তু আসিস আমার জানাজায়। ইতি- আপনাদের খারাপ ছেলে আপন।
আপনের ছোট বোন আছিয়া জানান, বাবা ইটভাটায় কাজ করেন। আর মা সুতার মেলে কাজ করেই সংসার চালান। আপন রাতে ভাত খেয়ে আমাকে দাদীর কাছে পাঠিয়ে দেয়। এরপর ঘরের দরজা বন্ধ করে দেয়। কিছুক্ষণ পরই মা কাজে ফিরে বাড়িতে এসে আপনকে ডাকাডাকি করে। কিন্তু ঘরের দরজা বন্ধ থাকায় ভেতর থেকে কোনো শব্দ না পেয়ে দরজা ভেঙে ঘরে ঢোকে। পরে দেখে আপন গলায় ফাঁসি দিয়ে ঝুলছে। ওর কাছেই চিঠিটি ছিল। এলাকাবাসী সরিষাবাড়ি থানার পুলিশে খবর দিলে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে।
সরিষাবাড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাশেদুল হাসান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। চিরকুটে আত্মহত্যার সুস্পষ্ট ইঙ্গিত রয়েছে। পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ দাফনের জন্য বলা হয়েছে। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।
এস এইচ/
Discussion about this post