ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ‘ব্যাপক’ স্থল হামলা শুরু করেছে দখলদার ইসরায়েল। রোববার (১৮ মে) এ তথ্য জানিয়েছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফ।
তারা বলেছে, হামাসের বিরুদ্ধে বড় হামলার অংশ হিসেবে স্থল হামলা শুরু হয়েছে। তাদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “গতকাল, অপারেশন গিডিয়ন চ্যারটের অংশ হিসেবে আমাদের দক্ষিণ কমান্ডের স্যান্ডিং এবং রিজার্ভ সেনারা উত্তর ও দক্ষিণ গাজা উপত্যকায় ব্যাপক স্থল হামলা শুরু করেছে।”
প্রতিরক্ষা বাহিনী আরও জানিয়েছে, স্থল হামলায় সহযোগিতা ও হামাসের পাল্টা হামলা প্রতিহতে গত এক সপ্তাহে তাদের বিমানবাহিনী হামাসের ৬৭০টি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে। যার মধ্যে ছিল হামাসের বিভিন্ন সেল, সুড়ঙ্গ এবং ট্যাংক বিধ্বংসী সাইট।
এখন পর্যন্ত হামাসের কয়েক ডজন সদস্য এবং বেশ কিছু অবকাঠামো ধ্বংস করা হয়েছে বলে দাবি করেছে তারা। এছাড়া গাজার গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলো দখল করে রাখার তথ্য জানিয়েছে দখলদারদের প্রতিরক্ষা বাহিনী।
বসতি (অবৈধ) স্থাপনকারী ইসরায়েলিদের রক্ষায় এই হামলা প্রয়োজন অনুযায়ী অব্যাহত থাকবে এবং বিমানবাহিনী এতে সহায়তা করবে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
গত এক সপ্তাহে ইসরায়েলিদের বিমান হামলায় গাজায় পাঁচশর বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। যার মধ্যে বেশিরভাগই নারী ও শিশু। দখলদার ইসরায়েল হামাসের সদস্যদের হত্যার দাবি করলেও; তাদের হামলায় নিহতদের বেশিরভাগই বেসামরিক মানুষ।
শুধুমাত্র আজ রোববার গাজায় অন্তত ১৩৫ জনকে হত্যা করেছে ইসরায়েলি সেনারা।
ইসরায়েলিদের হামলার কারণে গাজার উত্তরাঞ্চলের সব হাসপাতাল বন্ধ হয়ে গেছে বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এতে করে আহত মানুষ চিকিৎসা না পেয়ে মৃত্যুবরণ করছেন।
ইসরায়েলিদের এ বর্বরতা বন্ধে কাতারের রাজধানী দোহায় মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে হামাসের আলোচনা চলছে। আজও সেখানে যুদ্ধবিরতি নিয়ে কথা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত এ আলোচনা সফলতার মুখ দেখেনি।
এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে হামাসের এক কর্মকর্তা বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে বলেন, “ইসরায়েলের অবস্থান অপরিবর্তিত রয়েছে। তারা যুদ্ধ বন্ধের প্রতিশ্রুতি না দিয়ে জিম্মিদের মুক্ত করতে চায়। কিন্তু আমরা বলেছি গাজা থেকে ইসরায়েলের সব সেনাকে প্রত্যাহার করে নিতে হবে, গাজার অবরোধ তুলে নিতে হবে এবং ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দিতে হবে তাহলে তাদের সব জিম্মিকে আমরা একসঙ্গে মুক্তি দেব।”
যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত দখলদারদের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু আজ বলেছেন, তারা হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির জন্য চেষ্টা করছেন। তবে হামাস যদি গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি চায় তাহলে সংগঠনটির যোদ্ধাদের গাজা ছেড়ে চলে যেতে হবে এবং এ উপত্যকাকে সম্পূর্ণ নিরস্ত্রীকরণ করতে হবে বলে শর্ত দিয়েছেন তিনি।
সূত্র: আলজাজিরা
এম এইচ/
Discussion about this post