সূর্যের তেজ যেন সব কিছু পুড়িয়ে দিচ্ছে। তাপপ্রবাহের ফলে তীব্র গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ছে মানুষ। যাদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কম, তারা নানা ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে আক্রান্ত হন। বিশেষ করে, শিশু ও বয়স্করা। বিশেষজ্ঞ চিকিত্সকরা বলছেন, প্রকৃতিতে তাপমাত্রার পরিবর্তনের কারণে—সর্দি-কাশি, জ্বর, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট, অ্যাজমা, সিওপিডি, টনসিলাইটিস, ফ্যারিঞ্জাইটিস, সাইনোসাইটিসে আক্রান্ত হয় মানুষ।
চিকিৎসকরা বলছেন, গরমের এই সময়টিতে শরীর থেকে দ্রুত ঘামের মাধ্যমে পানি ও লবণ বেরিয়ে যায়। ফলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে, দেখা দেয় হালকা জ্বর বা ভাইরাস ইনফেকশন। বিশেষ করে শিশু, বৃদ্ধ এবং যারা আগে থেকেই দুর্বল তাদের ক্ষেত্রে ঝুঁকি বেশি।
এই সময়ে সচেতন না হলে সাধারণ ঠান্ডা ও জ্বর থেকেও বড় ধরনের জটিলতা তৈরি হতে পারে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এজন্য তারা পরামর্শ দিয়েছেন—প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি ও তরল পান করতে, হালকা ও সহজপাচ্য খাবার খেতে।
জ্বর বা দুর্বলতা দেখা দিলে বিশ্রাম নিতে হবে। হালকা খাবার খেতে হবে বারবার। স্যুপ, ডাবের পানি, লেবু শরবত, ওআরএস এসব শরীরের পানিশূন্যতা পূরণে সাহায্য করে। অতিরিক্ত ঘাম হলে দিনে দুইবার গোসল করাও উপকারী।
এই সময় হালকা রঙের সুতির পোশাক পরার পরামর্শ দিয়েছেন তারা। পাশাপাশি দুপুর ১২টা থেকে ৪টার মধ্যে রোদে বের না হওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। গরমে জ্বর বা ক্লান্তি তিন দিনের বেশি স্থায়ী হলে বা অতিরিক্ত দুর্বলতা, বমি, মাথা ঘোরা, প্রস্রাব কমে যাওয়া, চোখ বসে যাওয়ার মতো উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। কারণ এসবই পানিশূন্যতার লক্ষণ। আর বাড়ির ছোট সদস্য ও বয়স্কদের দিকে বিশেষ যত্নে রাখারও পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
কয়েকটি টিপস মানলেই আপনি থাকবেন সুস্থ। এমনকি আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়বে।
নারকেল তেল
নারকেল তেলের স্বাস্থ্য উপকারিতা অনেক। এতে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট থাকে যা শরীরের অতিরিক্ত মেদ কমাতেও সাহায্য করে। নারকেল তেলে অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য আছে। নারকেল তেল আপনার হৃদয়ের স্বাস্থ্যের জন্যও উপকারী। এমনকি ঠান্ডা-কাশি থেকে মুক্তি মিলবে। তবে অবশ্যই খাঁটি নারকেল তেল খেতে হবে।
আদা-আমলকি
ঘরোয়া উপায়ে সর্দি-কাশি সারাতে আদার কিল্প নেই। সবার রান্নাঘরেই এ উপাদানটি পাওয়া যায়। আদায় থাকা অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এজেন্ট হিসেবে কাজ করে। এর সঙ্গে আমলকিতে থাকা ভিটামিন সি যুক্ত হলে বেড়ে যায় গুণাগুণ।
বিশেষজ্ঞর পরামর্শ অনুসারে, আপনি প্রতিদিন আদা এবং আমলার রস খেতে পারেন। এটি তৈরির জন্য, সকালে ৩০ মিলিলিটার তাজা আমলকির রস এবং এক চা চামচ আদা রস মিশিয়ে একসঙ্গে খান।
আদা চা
গলা ব্যথা ও গলার খুসখুসে ভাব দূর করতে এ সময় আদা চা খাওয়ার অভ্যাস গড়তে পারেন। তবে অবশ্যই চিনি ছাড়া খেতে হবে। দুই কাপ পানিতে কিছুটা আদা কুচি দিয়ে ফুটিয়ে নিয়ে এর সঙ্গে সামান্য মধু মিশিয়ে খেলেই গলার খুসখুসে ভাব থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
আদা-মধুর অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান গলার গ্ল্যান্ড ফুলে যাওয়া কমায় এবং ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ ঠেকাতে সাহায্য করে।
এস এইচ/
Discussion about this post