আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে প্রতিরক্ষা খাতের জন্য ৩৮ হাজার ৭২৮ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের জন্য ৪০ হাজার ৮২ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। সংশোধিত বাজেটে দাঁড়ায় ৩৭ হাজার ৩৮০ কোটি টাকা।
সোমবার অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপনকালে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের জন্য এই অর্থ বরাদ্দের প্রস্তাব করেন। বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতার তার বাজেট বক্তব্য সম্প্রচার করা হয়।
অপরদিকে সশস্ত্রবাহিনী বিভাগের জন্য ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে ৪০ হাজার ৬৯৮ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে।
২০২৪-২৫ অর্থ বছরে সশস্ত্রবাহিনী বিভাগের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছিল ৪২ হাজার ১৪ কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে দাঁড়ায় ৩৯ হাজার ২৩৯ কোটি টাকা।
প্রস্তাবিত ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট দেশের অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং স্থিতিশীলতা ও প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এবারের বাজেটটি বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা হয়েছে, যা পূর্ববর্তী বছরগুলোর বাজেটের তুলনায় ভিন্ন।
এবার জন্য ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব করেন অর্থ উপদেষ্টা। এটি দেশের ৫৪তম, অন্তবর্তীকালীন সরকার ও অর্থ উপদেষ্টার প্রথম বাজেট।। এটি চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মূল বাজেটের (৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা) তুলনায় ৭ হাজার কোটি টাকা কম। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বাজেটের আকার হ্রাস পাওয়ার ঘটনা।
২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকা। প্রস্তাবিত বাজেট ঘাটতি ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা, যা জিডিপির ৩.৬২%। এ ঘাটতি পূরণে সরকার বৈদেশিক ঋণ, ব্যাংক ঋণ এবং সঞ্চয়পত্রের ওপর নির্ভর করবে। এবারের বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধি এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতা বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকায় এবং অবকাঠামো উন্নয়নে জোর দেয়া হয়েছে।
বিগত বছরে প্রতিবার বাজেট দেয়া হতো জুনের প্রথম দিকে যেকোনো বৃহস্পতিবার। পবিত্র ঈদুল আজহা আগামী ৭ জুন। ঈদুল আজহার ছুটি শুরু হওয়ার আগেই এবার বাজেট উপস্থাপন করলেন অর্থ উপদেষ্টা।
বাজেট–পরবর্তী সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়েছে আগামীকাল মঙ্গলবার (৩ জুন) বিকেল ৩টায়। বরাবরের মতো এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে। সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন করার সুযোগ পাবেন গণমাধ্যমকর্মীরা।
এবারের বাজেট উপস্থাপনে সংসদ না থাকায় কোনো সংসদীয় আলোচনা বা বিতর্ক হবে না। তবে ঘোষণার পর প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর জনমত নেয়া হবে। অর্থ মন্ত্রণালয় দেশের নাগরিকদের কাছ থেকে মতামত চাইবে, আর সেই মতামতের ভিত্তিতে বাজেটের চূড়ান্ত রূপ দেয়া হবে। চূড়ান্তকরণের পর যেকোনো একদিন, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে বাজেট অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে।
বৈঠকে অনুমোদন পাওয়ার পরঅধ্যাদেশ জারি করে বাজেটটি কার্যকর করবেন রাষ্ট্রপতি, যা আগামী ১ জুলাই থেকে কার্যকর হবে।
এম এইচ/
Discussion about this post