মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তাজউদ্দীন আহমদসহ মুজিবনগর সরকারের সব সদস্যের মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি বাতিলের খবরে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। মঙ্গলবার (০৩ জুন) রাতে সরকারের জারিকৃত অধ্যাদেশের উল্লেখ করে বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারীদের মুক্তিযোদ্ধাদের স্বীকৃতি বাতিলের কথা বলা হয়। যা নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়। পরে বুধবার (০৪ জুন) সকালে সরকারের পক্ষ থেকে খবরটি সঠিক নয় বলে জানানো হয়।
আজ সচিবালয়ে এই নিয়ে কথা বলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম। তিনি জানান বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে শেখ মুজিবুর রহমান ও জাতীয় চার নেতার মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি বাতিলের খবরটি সঠিক নয়।
এর আগে মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি বাতিলের খবর নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যসহ অনলাইনের বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
সংবাদধ্যমের প্রকাশিত খবরে বলা হয়, মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, এম মনসুর আলী, এএইচএম কামারুজ্জামানসহ ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বিজয়ী চার শতাধিক রাজনীতিবিদের (এমএনএ-এমপিএ) মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি বাতিল করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে এ-সংক্রান্ত এক অধ্যাদেশ জারির বরাত দিয়ে তাদেরকে ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী’ হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়।
এ বিষয়ে ফারুক-ই-আজম বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ জাতীয় চার নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, মো. মনসুর আলী ও এএইচএম কামরুজ্জামান মুক্তিযোদ্ধা।
উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বলেছেন, মুজিবনগর সরকারে যারা ছিলেন, তারাও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বিবেচিত হবে। যারা সশস্ত্রভাবে মুক্তিযুদ্ধ করেছে, যারা পরিচালনা করেছে তারা মুক্তিযোদ্ধা। তবে ওই সরকারের কর্মকর্তা, কর্মচারীরা সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বিবেচিত হবেন।
তিনি আরও বলেছেন, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রসহ কূটনীতিকরা সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা। সহযোগী মানে এ নয় যে তাদের সম্মান ক্ষুণ্ন করা হয়েছে। প্রজ্ঞাপনে বিষয়টি স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকলেও এটি নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করা হচ্ছে।
উপদেষ্টা বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধার নতুন সংজ্ঞা নির্ধারণ করে তা জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) আইনের সংশোধিত অধ্যাদেশে স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকলেও এটি নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করা হচ্ছে।
ফারুক-ই-আজম বলেন, ১৯৭২ সালে মুক্তিযোদ্ধার যে সংজ্ঞা ছিল সেটাই বাস্তবায়ন করেছেন। ২০১৮ ও ২০২২ সালে এটা পরিবর্তন করা হয়। মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী দুইয়েরই সম্মান, মর্যাদা, সুযোগ-সুবিধা একই থাকবে।
জাতিগতভাবে মুক্তিযুদ্ধ না করলে আমরা স্বাধীন হতে পারতাম না। মুক্তিযুদ্ধের চেয়ে গৌরব আমাদের জাতির ইতিহাসে আর কিছু হয়নি।
এম এইচ/
Discussion about this post